Sadrul Law:
অবৈধ উপায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে থাকা মিজানুর রহমান খান মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে অবশেষে মাহফুজুল হককে বিতাড়িত করা হয়েছে।
বহু নাটকীয়তা শেষে রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল হক অবৈধ উপায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে থাকা পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেন।
অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন ফকির অবসরে গেলে এই পদে সর্বজন শ্রদ্ধেয় সকল ছাত্রীদের আইডল নাজমা আক্তার লিজাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় সর্বসম্মতিক্রমে।
তখন থেকেই শুরু হয় ষড়যন্ত্র।নাজমা আক্তার লিজাকে সরিয়ে দিতে সে সময়কার নিগার সুলতানা ঝুমার কমিটি নানা অপতৎপরতা শুরু করে।
কোনভাবেই তাকে সরাতে না পেরে খোঁড়া অজুহাতে তার ১ বছরের বেতন শীটে সই করা থেকে বিরত থাকেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। পরবর্তিতে শিক্ষা অফিসের তদন্তে তাদের সে অভিযোগ মিথ্যা ও ভূয়া প্রমানীত হয়।
এরপর তাদের যৌথ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কলেজ ফান্ড তছরুপ ও লুটপাট করতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসানো হয় তাদের অনুগত তল্পিবাহক নীলনক্সা প্রণয়কারিদের অন্যতম হোতা রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল হককে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত নয় এমন সাবজেক্টের শিক্ষককে ভারপ্রাপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করার বিধান না থাকলেও সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ছাত্রী কেলেঙ্কারীর খলনায়ক মাহফুজুল হককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয় গায়ের জোরে রাজনৈতিক ও পেশী শক্তির দাপট দেখিয়ে।
উল্লেখ্য মাহফুজুল হক শিক্ষা সফরে গিয়ে ছাত্রি নিয়ে লাপাত্তা হওয়ায় তদন্ত কমিটির তদন্তে দোষী প্রমানীত হন এবং তাকে সে সময় বহিষ্কার করা হয়।
তার নানাবিধ নারী কেলেঙ্কারীর ইতিহাস জনসমুখে আসায় সে সময় শ্রীপুরের রাজপথে তার বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশ পর্যন্ত হয়।
এমনি একজন বিতর্কিত শিক্ষককে অবৈধ উপায়ে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়ায় শিক্ষার্থিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং নারী শিক্ষার অন্যতম পাদপীঠ মিজানুর রহমান খান মহিলা ডিগ্রী কলেজটি শিক্ষা কাঠামো ভেঙে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, মাহফুজুল হককে অবৈধ পন্থায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করে বিগত দুটি কমিটির সভাপতি ও কতিপয় শিক্ষক অনৈতিক আর্থিক সুবিধা লুটেছেন, যা নিরপেক্ষ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
এদিকে সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে মাহফুজুল হককে ভাপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করায় বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরে আসায় কমিটি তাকে অপসারন করে সিনিয়র ৫ জনের মধ্যে একজনকে দায়িত্ব অর্পণের জন্য বারবার তাগাদা দিয়ে চিঠি দিলেও বিগত দুটি কমিটির সভাপতি তা তোয়াক্কা করেননি।
অভিযোগ রয়েছে নিজেদের পদ ও অনৈতিক আর্থিক সুবিধা লুটতে তারা মাহফুজুল হককে উক্ত পদে বেআইনীভাবে রেখে দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
অবশেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নির্দেশক্রমে কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত), মো: আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার সাক্ষরিত ৪৯৩৭ নং স্মারকের চিঠির পর মাহফুজুল হক অবৈধ উপায়ে দখল করে থাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ ছাড়তে বাধ্য হন।
সবশেষ জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠির জনৈক ব্যক্তিকে সভাপতি করে তাদের খায়েশ মেটানোর অপতৎপরতায় লিপ্ত শিক্ষকদের একাংশ।
এই কুচক্রী মহল এক সময় নিগার সুলতানা ঝুমার কমিটিকে অপব্যাখ্যা করে ভুল পথে পরিচালিত করেছিল।পরবর্তিতে এই চক্রটি এই আসনের একজন মন্ত্রীকে ম্যানেজ করে রং বদলিয়ে তাকেও ম্যানেজ করে সুবিধা আদায়ে সক্ষম হয়েছিল।
সবশেষ একই চক্রটি বিএনপির একজন নেতাকে সভাপতির আসনে বসিয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অপতৎপরতা ও গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।