মোস্তাফিজুর রহমান, গাইবান্ধা (সাঘাটা,ফুলছড়ি): গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় এ বছর ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত জাতের বীজ এবং কৃষি বিভাগের সক্রিয় পরামর্শের ফলে কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।সরজমিন উপজেলার সাঘাটা, হলদিয়া, ভরতখালী ও পদুমশহর ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, ভুট্টার বাম্পার ফলনে চাষিরা দিনরাত পরিশ্রম করে ভুট্টার পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানান যায়, চলতি মৌসুমে ভুট্টার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১,৯৮৩ হেক্টর, কিন্তু আবাদ হয়েছে ২,০২৪ হেক্টর। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, এবার উন্নত জাতের ভুট্টা চাষ করেছি। গাছের অবস্থা খুব ভালো। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে ভালো ফলন হবে। তবে ন্যায্যমূল্য পেলে তবেই আমরা লাভবান হবো।
অন্য এক কৃষক গৌতম চন্দ্র বর্মন জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টা আবাদ ভালো হয়েছে। চার বিঘা জমিতে চাষ করেছি, ফলন বেশি হওয়ায় দিগুণ লাভের আশা করছি। আমার দেখাদেখি অনেকেই ভুট্টার দিকে ঝুঁকেছে। কৃষি বিভাগ থেকে সহজে সেবা ও সুবিধা পেয়েছি। এবার ভুট্টার চাহিদা বেশি, দাম ভালো থাকলে লাভবান হবো। ভুট্টা চাষে নারীরাও পিছিয়ে নেই।
সাঘাটার কৃষাণী রেশমি বেগম বলেন, নতুন হিসেবে আমরা ভুট্টার আবাদ শুরু করেছি। বাড়ির পাশের জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি, ফলন ভালো হয়েছে। বাজারদর ১৪-১৫শ টাকা মন হলে ভালো আয় হবে বলে আশা করছি।
সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং সঠিক পরিচর্যা চললে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবেন। “কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ, সার ও কীটনাশকের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ৯০০ জন কৃষককে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২ কেজি করে বীজ এবং ১০ কেজি ডিএপি ও এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, চর উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজস্ব কার্যক্রমের আওতায় ভুট্টার প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে এবং কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
কৃষকদের মতে, সরকারি সহায়তা ও সহজ শর্তে ঋণ পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে ভুট্টা আবাদ করা সম্ভব হবে। বাজারদর ভালো থাকলে কৃষকরা আরও উৎসাহিত হবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আশাবাদী যে, সঠিক পরিকল্পনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে কৃষকরা বাম্পার ফলন নিশ্চিত করতে পারবেন।