মস্কো, ১৪ মার্চ: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার মস্কোর ভনুকোভো বিমানবন্দরে তার বিমান অবতরণ করে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ নিশ্চিত করেছেন যে, প্রতিনিধি দলটি রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে।
এই বৈঠক এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন রাশিয়া দাবি করেছে যে তারা কুরস্ক অঞ্চলের সুদঝা শহর পুনর্দখল করেছে। সামরিক সাফল্যের কারণে রাশিয়া আলোচনায় শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক পোশাকে কুরস্ক অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিজয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ও রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন সংঘাত নিরসনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, যা ইউক্রেন সমর্থন করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা রাশিয়ার”। তবে ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ এই প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেছেন, “এটি ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য সাময়িক বিরতি মাত্র। শান্তির অভিনয় করার কোনো দরকার নেই।”
মস্কোতে আল জাজিরার প্রতিবেদক দোরসা জাবারির তথ্য অনুযায়ী, স্টিভ উইটকফ রুশ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট পুতিনও রয়েছেন। আলোচনায় রাশিয়া তাদের নিজস্ব দাবির তালিকা উপস্থাপন করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে—
✔ ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ
✔ ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে বিদেশি সেনা মোতায়েন নিষিদ্ধকরণ
✔ রাশিয়ার দখলকৃত ২০% ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের স্বীকৃতি
যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইউক্রেনের অবস্থান
ইউক্রেনের সুমি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড জানিয়েছেন, রুশ ড্রোন হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং স্থানীয় জনগণ যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সন্দিহান। তাদের আশঙ্কা, রাশিয়া এই সময়কে পুনরায় সংগঠিত হতে ব্যবহার করতে পারে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, যেখানে ইলন মাস্কও উপস্থিত ছিলেন। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ন্যাটো শান্তিরক্ষীদের ইউক্রেনে মোতায়েনের প্রস্তাব কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বিশ্ববাসী এখন রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার দিকে তাকিয়ে আছে, যা হয়তো এই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সমাধানে নতুন পথ উন্মোচন করতে পারে।