ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের হাম্পি শহরের কাছে সানাপুর লেক এলাকায় এক ভয়াবহ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাতের আকাশে তারা দেখার জন্য বের হওয়া একদল পর্যটকের ওপর হামলা চালিয়ে এক ইসরায়েলি নাগরিকসহ দুই নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় ভারতে বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
অনেক বিদেশি পর্যটক বুকিং ক্যান্সেল করেছেন।বিদেশি পর্যটকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ভারতে ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন
Incident details:
গত বৃহস্পতিবার রাতে সানাপুর লেক এলাকায় একদল পর্যটক গিটার বাজিয়ে গান গেয়ে রাতের পরিবেশ উপভোগ করছিলেন। হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে তিনজন সশস্ত্র যুবক সেখানে আসে এবং তাদের ওপর হামলা চালায়। প্রথমে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়, পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। হামলাকারীরা পুরুষ পর্যটকদের মারধর করে এবং দুই নারীর ওপর যৌন নির্যাতন চালায়। ঘটনায় এক ইসরায়েলি নারী ও উড়িষ্যার এক যুবক নিহত হন।
হাম্পি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। তবে এই ঘটনায় হাম্পির পর্যটন শিল্পে আস্থা হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই ঘটনা দীর্ঘমেয়াদে হাম্পির পর্যটন শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ভুক্তভোগীরা:
- ইসরায়েলি এক নারী (নিহত)
- উড়িষ্যার এক যুবক (নিহত)
- মার্কিন যুবক (সুস্থ)
- মহারাষ্ট্রের এক পর্যটক (সুস্থ)
- স্থানীয় হোমস্টে অপারেটর হিসেবে কর্মরত এক নারী
পুলিশের প্রতিক্রিয়া:
কোপ্পালের পুলিশ সুপার রাম আরাসিদ্দি জানান, হত্যার চেষ্টা, চুরি ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ আরও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই ঘটনায় তাদের নাগরিকের ওপর হামলার বিষয়ে অবগত হয়েছে বলে জানিয়েছে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে অনেক বিদেশি পর্যটক হাম্পি ছেড়ে চলে গেছেন এবং অনেকে তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল বা পরিবর্তন করেছেন।
রাজ্য মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপ:
কর্ণাটকের রাজ্য মহিলা কমিশন এই ঘটনায় তদন্তের জন্য কোপ্পালের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে।
নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন:
এই ঘটনায় ভারতে বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হাম্পি পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হলেও, এই ধরনের ঘটনা পর্যটন শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের জবাবদিহিতা এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।