বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, একটি গোষ্ঠী ক্ষমতার মোহে নিজেরা স্বৈরাচারের মতো কথা বলছে, স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে কথা বলছে। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচারের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই, এবং কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পেছানোর সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।
বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর রামপুরার হাজীপাড়া ইকরা মসজিদ মাঠে থানা বিএনপির কর্মিসভা ও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনার বিচার এবং নির্বাচন প্রসঙ্গে আমিনুল হক আরো বলেন, “শেখ হাসিনার বিচারের সাথে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচনী প্রক্রিয়া পেছানোর কোনো সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “ভুল পথে গেলে বাংলাদেশের জনগণ কাউকে ক্ষমা করবে না এবং স্বৈরাচারের মতো অবস্থায় পড়তে হবে।” তিনি যুক্ত করেন, দেশকে স্থিতিশীল করতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
স্বৈরাচার ও আন্দোলন এছাড়া তিনি বিএনপির দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে তারা ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার যুদ্ধের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনীকে তাড়িয়েছিল এবং ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছে। আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে তার পতন নিশ্চিত করেছি।”
স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্র আমিনুল হক আরও বলেন, “পতিত স্বৈরাচারের দোসররা বাংলাদেশে বসে বিদেশি প্রভুদের সহযোগিতা নিয়ে দেশের ভেতরে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।” তিনি বলেন, “এরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চায়, তবে তাদের ষড়যন্ত্রে বিএনপি কোনওভাবে প্রভাবিত হবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে এবং তারা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, “আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার গত ১৭ বছর ধরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করে বৃদ্ধি করে রেখেছে। এখন পর্যন্ত সেই আওয়ামী সিন্ডিকেটগুলো দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।” তিনি দাবি করেন, এই আওয়ামী সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে, যাতে জনগণের জন্য দ্রব্যমূল্য সুষম ও নিয়ন্ত্রিত থাকে।
কর্মশালায় অন্যান্য বক্তারা রামপুরা থানা বিএনপির আহ্বায়ক হেলাল কবির হেলুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইয়ুম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, আতাউর রহমান, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দীন, তহিরুল ইসলাম, শাহআলম, মাহাবুব আলম মন্টু প্রমুখ।
বিএনপির এই নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, তারা সরকারকে তীব্র সমালোচনা করছেন এবং দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দাবির প্রতি একযোগ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের নেতারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, আওয়ামী সরকার দেশের উন্নতি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের বিশ্বাস, শুধুমাত্র নির্বাচনই দেশের ভবিষ্যতকে নির্ধারণ করবে।