সত্যজিৎ দাস:
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তিন দিনের ব্যবধানে আবারও বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের নওয়াগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয় ২১ জন বাংলাদেশিকে। পরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এর মাত্র তিন দিন আগে, ২৫ মে একই সীমান্ত দিয়ে ৩২ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করেছিল বিএসএফ। ফলে তিন দিনের ব্যবধানে একই সীমান্ত দিয়ে মোট ৫৩ জন বাংলাদেশিকে ভারতে ঠেলে দেওয়া হলো।
বিজিবি সূত্র জানায়, ৫২ বিজিবির নওয়াগ্রাম বিওপির সদস্যরা ভোররাতে অভিযান চালিয়ে ৮ শিশু, ৫ পুরুষ ও ৮ নারীসহ মোট ২১ জনকে আটক করেন। তাঁদের বেশিরভাগই দিনমজুর, যারা অবৈধভাবে কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়েছিলেন।
আটকদের মধ্যে রয়েছেন কেরামত শেখ (৬০), রমেছা বেগম (৫৫), কুলছুম শেখ (২০), ওমর শেখ (২ মাস), সোহাগী বেগম (৩২), সুমাইয়া (১১), রাফি (৯), হাসান (৩), আমেনা (৮), ইয়াসিন (৫), ইয়াকুব (৪) এবং আরও অনেকে, যাঁরা মূলত নড়াইল, টুঙ্গিপাড়া ও আশেপাশের জেলার বাসিন্দা।
৫২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান (পিপিএম) বলেন,
“আটককৃতরা জানিয়েছেন, তাঁরা কাজের খোঁজে সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন। ভারতের পুলিশ তাঁদের আটক করে পরে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।”
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশরাফ উজ্জামান জানান,
“বিজিবি তাঁদের থানায় হস্তান্তর করেছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানো হবে।”
২৫ মে’র ঘটনার পর সীমান্তে বিজিবির নজরদারি জোরদার করা হলেও, একই রুট দিয়ে আবারও পুশ-ইন হওয়াকে উদ্বেগজনক বলছেন স্থানীয়রা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পুশ-ইন কেবল মানবিক সংকটেরই ইঙ্গিত দেয় না, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। নিয়মিত নজরদারি ও কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ ছাড়া এ সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব নয়।