হুমায়ুন কবির মিরাজ, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি:
সীমান্ত ঘেঁষা যশোরের বেনাপোল পুটখালী গ্রামের আত্মপ্রত্যয়ী যুবক নাসির উদ্দিন প্রমাণ করেছেন—ইচ্ছা, পরিশ্রম আর নিষ্ঠা থাকলে শিক্ষা ও সুযোগের ঘাটতিও থামাতে পারে না সাফল্যের পথচলা। জীবনের শুরুটা ছিল কঠিন, বাবার সঙ্গে গরু ব্যবসায় হাতেখড়ি। কিন্তু আজ তিনি একজন সফল খামারি, যার খামার ঘিরে গড়ে উঠেছে কোটি টাকার সাম্রাজ্য।
৮০০ গরু, উট-বকরিসহ বৈচিত্র্যময় খামার
নাসির উদ্দিনের খামারে রয়েছে প্রায় ৮০০টি বিদেশি জাতের গরু, ভারতীয় কটা জাতের মহিষ, রাজস্থানের ছাগল, দুম্বা ও ভেড়া। এমনকি রয়েছে মরুভূমির জাহাজ খ্যাত ১৫টি উটও। এর মধ্যে একটি উট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে ২৮ লাখ টাকায়।
সফল উদ্যোক্তা, কর্মসংস্থানের হাতছানি
খামার ঘিরে কাজ করছেন প্রায় ১০০ জন কর্মচারী। তাদের মাসিক বেতন ১০-১৮ হাজার টাকা, সঙ্গে খাবার, চিকিৎসা ও অন্যান্য সুবিধা। খামারের একজন কর্মচারী আল-আমিন বলেন, “নাসির ভাইয়ের ৮টি খামার আছে। প্রতিটি খামারেই উন্নত জাতের গরু। কোরবানির সময় একেকটির দাম ৬ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত হয়।”
আরেক কর্মচারী ওলিয়ার হোসেন জানান, “গরু বিক্রির পাশাপাশি খামারে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ লিটার দুধ সংগ্রহ করা হয়। এতে খামারের আয় আরও বেড়ে যায়।”
আধুনিক ব্যবস্থাপনা, প্রতিদিন দেড় লাখ টাকার খাবার
খামারে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পশুদের জন্য ফ্যান, নিয়মিত চিকিৎসক, আর প্রতিদিন গরুগুলোর জন্য খাবারে ব্যয় হয় দেড় লাখ টাকার মতো। কোরবানির সময় এই ব্যয় আরও বাড়ে।
নাসির উদ্দিন বলেন,
“গরু পালনে সন্তানের মতো যত্ন লাগে। আমি গর্বিত যে ১০০ জনের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান করতে পেরেছি। মানুষের মুখে হাঁসি ফোটাতে পারাটা আমার জীবনের বড় সাফল্য।”
Conclusion
একজন অশিক্ষিত গ্রামীণ যুবক থেকে আজকের সফল উদ্যোক্তা—নাসির উদ্দিনের গল্প বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তার জীবন দেখিয়ে দিয়েছে, সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমে যে কেউ হতে পারেন অনুকরণীয়।