আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি:
সহজ-সরল জীবন যাপনকারী নিরারণ দাসের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালাল ওসমানীনগরের ‘বন্ধুমহল’। সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের ভূধরপুর গ্রামের এই হতদরিদ্র ব্যক্তি এত দিন স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন একটি জরাজীর্ণ ঘরে। প্রতিটি বর্ষা মৌসুমে তাদের দুর্ভোগ পৌঁছাত চরমে। সেই দুর্ভোগের অবসান ঘটিয়ে ‘বন্ধুমহল’ তৈরি করে দিয়েছে আধাপাকা একটি নতুন ঘর।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে নিরারণের পরিবারকে ঘরটি হস্তান্তর করা হয়। ঘরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন। তিনি ঘর হস্তান্তরের সময় পরিবারটির স্বনির্ভরতায় সহায়তা করতে সরকারি উদ্যোগে একটি সেলাই মেশিন এবং প্রশিক্ষণের আশ্বাস দেন।
নিরারণ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাজারে মানুষের বাজার সদাই বহনের কাজ করে সামান্য উপার্জনে সংসার চালিয়ে আসছেন। তার তিন কন্যার মধ্যে দু’জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং একজন স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। তাদের বসবাসের অনুপযোগী ঘরের চিত্র চোখে পড়ে বন্ধুমহলের একাধিক সদস্যের।
সবার সম্মিলিত উদ্যোগে শুরু হয় ঘর নির্মাণের কাজ। প্রবাসে অবস্থানরত বন্ধু সঞ্চয় গুপ্তের আর্থিক সহায়তা ও উৎসাহে মাত্র দুই মাসে নির্মিত হয় আধাপাকা এই স্বপ্নের ঘরটি।
ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন্ধুমহলের সদস্য সাংবাদিক আব্দুল মতিন, মো. আনোয়ার হোসেন আনা, কবির আহমদ, সুজন দে, অজিত দেব, আব্দুল মুমিন রিপন, স্বাস্থ্যকর্মী রফিক মিয়া, অঞ্জন দেবনাথ প্রমুখ।
এছাড়াও ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা কর্মী রাজীব ভট্টাচার্য্য, দিলশাদ মিয়া, করুনা দেব, রনজিৎ দেব, বিদ্যুৎ ধরসহ বন্ধুমহলের আরও অনেক সদস্য।
উল্লেখ্য, বন্ধুমহল হচ্ছে ওসমানীনগর এসএসসি ৯৬-৯৭ ব্যাচের সহপাঠীদের দ্বারা গঠিত একটি সংগঠন। তারা নিয়মিত বিভিন্ন মানবিক, সামাজিক ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সংগঠনের মূল প্রেরণা জোগান প্রবাসী সদস্যরা—যাদের মধ্যে রয়েছেন সঞ্চয় গুপ্ত, জামাল মিয়া, সেলিম আহমদ, আশরাফ আহমদ, আমিনুর রহমান, মশিউর রহমান মিশু, হেলাল আহমদ ও দেলোয়ার হোসেন।
স্থানীয়দের মতে, বন্ধুমহল বর্তমানে সমাজের আশার বাতিঘর হয়ে উঠেছে। তাদের সেবামূলক কার্যক্রম শুধু সমাজে সাড়া ফেলছে না, বরং সমাজের অন্যদেরও ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করছে।