তানভীর তুহিন, স্টাফ রিপোর্টার:
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিতরণ করা বকনা বাছুর নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১ জুন) সকাল ১১টায় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাছুর বিতরণকালে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলেরা।
প্রকল্পের একাধিক সুবিধাভোগী জানান, বিতরণকৃত বাছুরগুলো অত্যন্ত রোগা ও দুর্বল। লালন-পালনে অতিরিক্ত সময় ও ব্যয় হবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। অনেকে অভিযোগ করেন, প্রকৃত ইলিশজেলে নন—এমন লোকজনও এই সুবিধা পেয়েছেন।
এক জেলে বলেন, “এই বাছুরগুলো বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাবে কি না সন্দেহ। বর্ষাকালে রোগা বাছুর টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।”
আরেক উপকারভোগীর স্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই বাছুরের অবস্থা দেখে মনে হয়, আমার ছোট বাচ্চা লালন করব না বাছুর? এগুলো না দিলেই ভালো হতো।”
জেলেদের অভিযোগ, প্রতিটি বাছুরের জন্য সরকারিভাবে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও বিতরণকৃত বাছুরগুলোর বাজারমূল্য ১২-১৫ হাজার টাকার বেশি নয়।
এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, “বাছুরগুলো ঠিকাদারের মাধ্যমে আনা হয়েছে। ঈদের সময় বাজেটের মধ্যে এর থেকে ভালো বাছুর পাওয়া যায় না। কিছু বাছুর নিয়ে দুঃখজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।”
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা জানান, “রোগাক্রান্ত বাছুর বিতরণের বিষয়ে অবগত হয়েছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে নির্ধারিত মৌসুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। সেই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে সরকার বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করে থাকে। তবে এবারের বিতরণে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
স্থানীয় সচেতন মহল প্রকৃত উপকারভোগীদের চিহ্নিত করে মানসম্মত সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।