তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি :
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় মাত্র একদিনের ব্যবধানে ঘটে গেছে দুটি মর্মান্তিক ধর্ষণের ঘটনা। ভয়াবহ এই ঘটনায় ভিকটিমদের একজন বাক ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরী, অপরজন এক বিবাহিত নারী। দুটি ঘটনাই এলাকাজুড়ে গভীর ক্ষোভ ও শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
প্রথম ঘটনা: আপন মামার হাতে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের শিকার
১৩ জুন সকালে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের উত্তর চাপড়ী গুচ্ছগ্রামে ঘটে প্রথমটি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বাক ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে তার আপন মামা মো. বাদশা ওরফে বাসু (৫৫) বাড়ির বাইরে ঘুরাতে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর কিশোরীকে বিবস্ত্র অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্ত বাদশা এলাকায় নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। এই ঘটনা প্রকাশ পেতেই গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
দ্বিতীয় ঘটনা: পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার বিবাহিত নারী
একই দিনে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কেয়ামূল্যাহ গ্রামে ঘটে দ্বিতীয় ভয়াবহ ঘটনা। অভিযোগ অনুযায়ী, এক বিবাহিত নারী তার পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। এসময় স্থানীয় দুই যুবক তাদের পথরোধ করে। প্রেমিককে তাড়িয়ে দিয়ে তারা ওই নারীকে জোরপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
আইনি ব্যবস্থা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
দুই ঘটনায় তজুমদ্দিন থানায় পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহব্বত খান বলেন:
“দুই ঘটনাকেই আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে।”
দুটি ভয়াবহ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন করেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
একজন নারী অধিকারকর্মী বলেন,
“একদিনে দুটি ধর্ষণের ঘটনা শুধু অপরাধ নয়, এটি সমাজের গভীর নৈতিক অবক্ষয়ের পরিচয়। এখনই কঠোর শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও বাড়বে।”
সম্পাদকীয় মন্তব্য: সমাজ কি জেগে উঠবে?
একই দিনে দুটি নারীর সম্ভ্রমহানির ঘটনা সমাজের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। বিশেষ করে, একজন প্রতিবন্ধী কিশোরীর ওপর তার আপন আত্মীয়ের পাশবিকতা—এটি কেবল একটি অপরাধ নয়, মানবিকতারও পরাজয়।
এখন প্রয়োজন কেবল মামলা বা গ্রেফতার নয়—সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা, শিক্ষা ও সাহসিকতা নিয়ে দাঁড়ানো। আইন ও শাস্তির পাশাপাশি দরকার সামাজিক প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে তোলা।