Habiganj Correspondent:
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জনের বেশি। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন নবীগঞ্জ উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করে।
সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন জানান, সোমবার বিকেল ৪টা থেকে মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত:
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুলাই ফেসবুকে লেখালেখি নিয়ে স্থানীয় দুই সাংবাদিক আশাহিদ আলী ও সেলিম তালুকদারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জের ধরেই সেলিম তালুকদারের অনুসারীরা আশাহিদ আলীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় আনমুন গ্রামের লোকজন তিমিরপুর গ্রামের দুই যুবককে ধরে পুলিশে দেয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সোমবার দুপুরে ঘোষণা দিয়ে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা, বল্লম ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হন। বিকেল ৪টার পর উভয়পক্ষ নবীগঞ্জ উপজেলা সদরে মুখোমুখি হয় এবং ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মধ্যে চলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত। এতে ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত হন এবং গুরুতর আহত হন অন্তত ৩০ জন, যাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ:
সংঘর্ষের সময় নবীগঞ্জ বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাজার এলাকায় রীতিমতো রণক্ষেত্রের পরিবেশ তৈরি হয়।
পুলিশের অবস্থান:
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, “তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ ঘটেছে। বাজারে কিছু দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
প্রশাসনের পদক্ষেপ:
ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।