হুমায়ুন কবির মিরাজ:
যশোর-বেনাপোল ও নাভারণ-সাতক্ষীরা মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নজিরবিহীন উদ্যোগ নিয়েছে নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশ। মহাসড়কের দুই পাশে থাকা প্রায় ৩০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফিলিং স্টেশনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা দিয়ে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার মহাসড়ক আসবে ক্যামেরার কড়া নজরদারির আওতায়।
নাভারণ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “মহাসড়ককে নিরাপদ রাখতে হলে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সেবা কেন্দ্রগুলোর সহযোগিতা অপরিহার্য। সিসি ক্যামেরা থাকলে দুর্ঘটনা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এমনকি মাদক ও চোরাচালান রোধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্যামেরা স্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।”
হাইওয়ে পুলিশের পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “নিরাপত্তা নিশ্চিতে হাইওয়ে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। যানজট, দুর্ঘটনা, অপরাধ এবং চোরাচালান রোধে সিসি ক্যামেরা অত্যন্ত কার্যকর। তাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন মহাসড়কমুখী ক্যামেরা স্থাপন করে, সেটি নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
এদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছেন।
বেনাপোলের আমড়াখালী এলাকার এসিআই মোটরসের কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, “পুলিশের চিঠি পাওয়ার পর আমরা দু’টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা বসিয়েছি, যেগুলো পুরো মহাসড়ক কাভার করছে।”
শ্যামলাগাছীর শ্যামলী ফিলিং স্টেশনের পরিচালক মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “আমাদের ফিলিং স্টেশনে আগে থেকেই ১২টি ক্যামেরা ছিল। এখন সেগুলোর দিক মহাসড়কের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছি। পুরো রাস্তাটাই এখন আমাদের নজরদারিতে।”
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়াতেও স্বস্তির ঝলক।
নাভারণ এলাকার ভ্যানচালক মন্টু মিয়া বলেন, “রাতে চুরি-ডাকাতির পর দুর্বৃত্তরা এই রাস্তাই ব্যবহার করে পালায়। এখন ক্যামেরায় ধরা পড়লে পুলিশ সহজেই শনাক্ত করতে পারবে।”
হাইওয়ে যশোর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাসিম খান বলেন, “খুলনা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়ার নির্দেশনায় আমরা পুরো ৫৩ কিলোমিটার মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এতে যানবাহনের নম্বর প্লেট, অপরাধী ও দুর্ঘটনার তথ্য দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।”
হাইওয়ে পুলিশ আশা করছে, ঈদুল আজহার আগেই সবগুলো প্রতিষ্ঠান সিসি ক্যামেরা স্থাপন সম্পন্ন করবে। এ উদ্যোগ সফল হলে দেশের অন্যান্য মহাসড়কেও এটি রোল মডেল হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।