Gaibandha Correspondent:
রাজধানী থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে দীর্ঘ ৮ থেকে ১০ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো কাজ শেষ না হওয়াকে উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নে অবহেলার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চারমাথা মোড়ে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি বলেন, “এই একটি প্রকল্পেই বোঝা যায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ কীভাবে পিছিয়ে আছে।”
তিনি বলেন, “বড় বড় দল ও নেতাদের আমরা দেখেছি। কিন্তু অধিকাংশের লক্ষ্য ছিল নিজেদের লাভবান হওয়া, নিজেদের রাজনৈতিক ক্রেডিট নেওয়া। এলাকার প্রকৃত উন্নয়নের প্রতি তাঁদের মনোযোগ ছিল না।”
গোবিন্দগঞ্জ চিনিকলের জমিতে ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা) স্থাপন নিয়ে তিনি বলেন, “গোবিন্দগঞ্জবাসীর বহুদিনের দাবি হলো এখানে একটি ইপিজেড গড়ে তোলা। এটি বাস্তবায়িত হলে গোটা অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। এজন্য শুধু সরকারের নয়, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদেরও আন্তরিকতা জরুরি।”
জনগণকে উদ্দেশ করে সারজিস আলম বলেন, “আপনারা সচেতন থাকবেন—যদি কোনো রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা স্বার্থের সংঘাতে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা আসে, তাহলে তা রুখে দিন। ব্যক্তিগত নয়, সবার আগে জেলার স্বার্থ বিবেচনা করুন।”
তিনি আরও বলেন, “গাইবান্ধার উন্নয়ন এবং মানুষের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নে এনসিপি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে পাশে থাকবে।”
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা মিতু, আসাদুল্লাহ গালিব, সাদিয়া ফারজানা, নাজমুল হাসান, কেন্দ্রীয় সংগঠক ফিহাদুর রহমান, সম্রাট শেখসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, “আমরা আপনাদের বলতে এসেছি, আপনাদের কথা শুনতে এসেছি। ভোট চাইতে নয়। আপনারা নিজেদের এলাকার যে ব্যক্তি ভালো, যার আচরণ ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, যিনি চাঁদাবাজি, দখলদারি বা অপব্যবহার করেন না—তিনি যে দলেরই হোন, তাকেই ভোট দিন।”
প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দলীয়করণের কারণে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা অতীতে অন্ধভাবে ক্ষমতার দালালি করেছেন, তারা আজ জনসমক্ষে লজ্জিত। পেশাদারিত্ব ও শপথ রক্ষার মাধ্যমে দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে আপনাদের।”
সারজিস আলম দিনভর গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলায় পথসভায় অংশ নেন। রংপুর থেকে যাত্রা শুরু করে তিনি গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটার বোনারপাড়া, ফুলছড়ির কালিরবাজার, গাইবান্ধা পৌরপার্ক, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট ও সুন্দরগঞ্জের স্বাধীনতা চত্বরে বক্তব্য রাখেন।