মো. শেখ ছোবাহান, সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠলেও ক্রেতা সংকটে হতাশ খামারিরা। ঘনঘন বৃষ্টিপাত এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে হাটে গরুর সরবরাহ বাড়লেও প্রত্যাশিতভাবে বিক্রি হচ্ছে না।
শনিবার (৩১ মে) উপজেলার সাড়ে সাতরশি ও কৃষ্ণপুর গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি জাতের প্রচুর গরু হাটে উঠেছে। তবে তুলনামূলকভাবে ক্রেতা ও পাইকারের উপস্থিতি কম। হাটে গরুর পাশাপাশি ছাগলের চাহিদা ও বিক্রি তুলনামূলক বেশি। ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি থাকলেও বড় গরুর চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম।
সাড়ে সাতরশি হাটে গরু বিক্রেতা সাঈদ জানান, তিনি দুইটি গরু এনেছেন, যার মধ্যে একটি ছোট আকারের গরু ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। অপরটি এক লাখ টাকা দাম হাকাচ্ছেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতার সংখ্যা কম বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সতেররশি গ্রামের খামারি আইয়ুব হাওলাদার বলেন, “এবার গো-খাদ্যের দাম বেশি থাকায় গরু পালনে খরচও বেড়েছে। ভালো দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।”
সাড়ে সাতরশি গ্রামের আরেক বিক্রেতা আবু সালেহ মুসা জানান, “গত বছর ঈদের পর ছয়টি গরু কিনেছিলাম সাড়ে চার লাখ টাকায়। বছরে প্রতিটি গরু বড় করতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন বাজারে গরু বিক্রি করে সুদসহ সমিতির ঋণ শোধ করতে হবে।”
অন্যদিকে, পশ্চিম শ্যামপুর গ্রামের ক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, “দেশি জাতের একটি ষাঁড় কিনেছি। মনে হচ্ছে, গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা কম।”
সাড়ে সাতরশি হাটের ইজারাদার বাহালুল মাতুব্বর জানান, “এবার হাটে গরুর সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা গরু কিনতে আসছেন। হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিতে থানা পুলিশ ছাড়াও হাট কমিটি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।”
ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস বলেন, “জেলায় নয়টি উপজেলায় কোরবানির জন্য প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষ মোটাতাজা করা হয়েছে। যা জেলার চাহিদার চেয়েও বেশি। আমরা আশাবাদী, খামারিরা তাদের পশুর ন্যায্য দাম পাবেন।”