
সরাইল ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পশুর হাটে যুবদল নেতার নাম কমিটিতে না থাকায় হট্রোগোল। উপজেলার পাকশিমুলে অস্থায়ী পশুর হাট পরিচালনা কমিটির তালিকায় যুবদল নেতা তানবিরের নাম থাকায় হট্রোগোল বেধে যায়। সভাস্থলেই বাক-বিতন্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে । শুক্রবার রাতে উপজেলার অরুয়াইল ও পাকশিমুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
ওই ঘটনার জের ধরে ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। যুবদল নেতা তানবির ছাত্রদল নেতা আলভি ও জিদানের বিরুদ্ধে।
শনিবার সকালে দেশীয় অস্ত্র স্বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অরুয়াইল আব্দুস সাত্তার কলেজ মাঠে ও সিএনজি ষ্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়েছিল একদল গ্রামবাসী। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় সেই উত্তেজনা প্রশমিত হয়।
তানবিরের ইন্ধনে হত্যার উদ্যেশ্যে হামলার শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা বলেছেন বিএনপি নেতা এনামুল। মারধরের ঘটনাকে মিথ্যা দাবী করে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে জানান যুবদল নেতা তানবির আহমেদ শিয়ান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও অরুয়াইলের অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় আব্দুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজ কতৃপক্ষ । হাট পরিচালনার জন্য অরুয়াইল পাকশিমুল ও চুন্টা ইউনিয়নের লোকজন নিয়ে শুক্রবার বিকেলে এক সভায় বসেন। পরিচালনার তালিকায় পাকশিমুল ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সম্পাদকের নাম থাকলেও ইউপি যুবদলের সভাপতি তানবিরের নাম না থাকায় তিনি ক্ষুদ্ধ হন। সভাস্থলেই এর প্রতিবাদ করতে থাকেন। সকলেই তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে অরুয়াইল ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হকের সাথে তানবিরের বাক-বিতন্ডা হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে এনামুল সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে জেলা শহরের উদ্যেশ্যে রওনা দেন। পাকশিমুল এলাকার একটি নীর্জন জায়গায় যাওয়ার পর টর্চ লাইটের আলোতে সিএনজির গতিরোধ করে ছাত্রদল নেতা আলভি, জিদানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক। তারা এলোপাতাড়ি এনামুলকে মারধর করে আহত করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এনামুলের গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অরুয়াইল সিএনজি ষ্ট্যান্ডে জড়ো হলে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এনামুল হক বলেন, যুবদল নেতা তানবিরের ইন্দনে ছাত্রদল নেতা আলভি ও জিদানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক মুখ বেঁধে আমার উপর হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। আমার কাছে থাকা নৌকার ভাড়ার ৩ লাখ টাকাও তারা ছিনিয়ে নিয়েছে। কি কারণে আমাকে হত্যার উদ্যেশ্যে এভাবে মারধর করল কিছুই বুঝলাম না। আমি আইনের আশ্রয় নিব।
যুবদল নেতা তানবির নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, এনামুল আমার বড় ভাই। আমি উনাকে সম্মান করি। হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে উনার সাথে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। এটা আমি মুরব্বিদের সহায়তায় নিস্পত্তি করে ফেলব। তারা কেন ও কি কারণে হামলা করল তা জানি না।
জানতে চাইলে অরুয়াইলের বিটের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক পঙ্কজ দাস ও বিএনপি নেতা গাজী নোয়াব মিয়া বলেন, শুনেছি পশুর হাট পরিচালনা কমিটির তালিকায় নাম থাকায় যুবদল নেতা তানবির সভায় প্রতিবাদ করেছেন। সেখানে পাকশিমুল ইউপি বিএনপি’র সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান সামাদের সাথে বাক বিতন্ডা হয়েছে। রাতে এনামুলের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকালে এনামুলের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নিয়েছিল। কোন ধরণের সংঘর্ষ হতে দেইনি। পরে বিএনপি’র উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষকে শান্ত করা হয়েছে। মারধর বা হামলার বিষয়টি আইনি ভাবে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।