Satyajit Das (Moulvibazar Correspondent):
দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর নতুন করে চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে করে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহনব্যবস্থা যেমন গতিশীল হবে,তেমনি পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে,ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দেশের ২৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে সাতটি পুনরায় চালুর জন্য বাছাই করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—বগুড়া, মৌলভীবাজারের শমশেরনগর, লালমনিরহাট, ঈশ্বরদী ও ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর। বাকি দুটি বিমানবন্দরের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানিয়েছেন,প্রথম ধাপে বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চলছে। রানওয়ে সম্প্রসারণ,লাইটিং সিস্টেম এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। জুলাই মাস থেকেই এখানে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।
বগুড়া বিমানবন্দর নির্মাণ শেষ হয় ২০০০ সালে, কিন্তু তা কখনো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হয়নি। এবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকা-বগুড়া রুটে ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এভিয়েশন বিশ্লেষক এ টি এম নজরুল ইসলাম মনে করেন,ঈশ্বরদী ও ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর পুনরায় চালুর মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ বিশেষ সুবিধা পাবে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ও ভোগান্তির হাত থেকে মুক্তি মিলবে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও যাতায়াতে।
পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালু করতে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর মধ্যে রানওয়ে সংস্কার,টার্মিনাল নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং জনবল নিয়োগ অন্যতম। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন,পরিকল্পিত উন্নয়ন ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে,পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো পুনরায় সচল করা শুধু পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন নয়,বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত বিনিয়োগ। এর মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ কানেক্টিভিটি যেমন বাড়বে,তেমনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও নতুন মাত্রা যোগ হবে।