মোঃ গোলাম কিবরিয়া ,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা গভীর রাতে দুইটি স্পিডবোট ভাঙচুর ও একটি স্পিডবোটের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার দিবাগত রাতে (৬ জুলাই ২০২৫) চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনগর মৌজায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে তিনটি নৌকায় প্রায় ৩৫-৪০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে খেয়াঘাট এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে দুটি স্পিডবোট নদীর মাঝখানে নিয়ে ভাঙচুর করা হয় এবং একটি বোটের ইঞ্জিন খুলে নেয় তারা।
খেয়া ঘাটে কর্মরত ড্রাইভার সালাম বিশ্বাস জানান, সন্ত্রাসীরা নদীপথে এসে হামলা চালায়। আতঙ্কে ড্রেজারের কর্মীরা নদীর পাড় থেকে উপরে উঠে আশ্রয় নেন। পরে গুলির খোসা দেখে গুলিবর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জানান, ঘরের ফাঁক দিয়ে তিনটি নৌকায় সশস্ত্র লোকজনকে গুলি ছুড়তে দেখেছেন। ড্রেজার চালকরা ভয়ে তাঁর বাড়িতে আশ্রয় নেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বেলাল হোসেন জানান, মেসার্স সরকার ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহী জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বৈধভাবে ২৪ একর বালুমহালের ইজারা নিয়েছে। তারা নিয়মিত বালু উত্তোলন ও বিক্রয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। তবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ চাঁদা দাবি করে, যা না দিলে এ ধরনের হামলার শিকার হতে হয়।
রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার বলেন, “কিছুদিন আগে লালপুরের কাকন বাহিনীর লোকজন ‘খাল এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি স্লিপ চালু করে খাজনা আদায় শুরু করে, যার বৈধতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাদের চাঁদা না দেওয়াতেই হয়তো এই হামলা।”
ঘটনার পর নৌ পুলিশ ও থানা পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নৌ পুলিশের চারঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ হুমায়ূন রশীদ জানান, “বালুমহালটি বৈধভাবে ইজারা নেওয়া হয়েছে। উত্তোলিত বালু ঈশ্বরদী এলাকায় বিক্রয় করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ নিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকার একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধ থেকে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছে।”
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম আছাদুজ্জামান জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে এবং নৌ পুলিশ ও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।”
সন্ত্রাসীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।