Staff Reporter:
চলাচলের রাস্তার একপাশে বাড়ির আঙিনা আরেক পাশে ফিশারির পাড় থাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কয়েকটি গ্রামের অলহরী-জয়দা ভায়া সরকার বাড়ি রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী জয়দা গ্রামের সরকার বাড়ি রাস্তার প্রায় এক কিলোমিটার জায়গায় অল্প বৃষ্টিতেই জমে থাকে হাঁটু পানি। জয়দা, ইজারাবন্দ ও ধুরধুরিয়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এ পথে চলাচল করে। ফিসারির পাড় আর বাড়ির আঙিনায় তুলা মাটিতে রাস্তার পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় একটু বেশি বৃষ্টি হলেই রাস্তার পানি গড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে। রাস্তার জমা পানিতে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে কর্দমাক্ত হয়ে অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন ও পথচারীরা পড়েছে বিপাকে। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে যাতায়াতকারী কোমলমতি শতাধিক শিক্ষার্থী তাদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়ই পা পিছলে পড়ে যায়। ফলে তাদের জামাকাপড় ও বইখাতা ভিজে স্কুলে না যেতে পেরে আবার ফিরে আসতে হয় বাড়িতে। এতে ব্যাহত হচ্ছে তাদের পড়াশোনা। গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের দাবি পানি নিষ্কাশনের পথ তৈরি করে রাস্তাটি যেনো পাকাকরণ করা হয়।
অলহরী জয়দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাইজু আক্তার বলেন, ‘আঙ্গর বাড়ি থেইক্যা ইস্কুলে যাইতে খুব কষ্ট অই। অনেকটা রাস্তা প্যাক, কাঁদা আর পানিতে আইট্যা আউন-যাউন লাগে। মাঝে মধ্যে পা পিছলাইয়া পইড়া যাই। পইড়া গেলে ওইদিন আর ইস্কুলে যাইতে পারি না। আঙ্গর রাস্তাটা পাক্কা কইরা দিলে সরকারের কি অই? আঙ্গর কষ্ট কি কষ্ট না? এইবা প্রত্যেকদিন কি ইস্কুলে আউন-যাউন করুইন যা?’
জয়দা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর্নিয়া তাসরিন আনিকা বলেন, ‘আমাদের এলাকার বাড়ির পাশের রাস্তার প্রায় এক কিলোমিটার জায়গায় পানি উঠেছে। দুইপাশ দিয়েই পানি যাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই, রাস্তার উপরে পানি। যার কারণে আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে অনেক অসুবিধা হয়। ইউনিফর্মের মধ্যে কাঁদা লেগে যায়। সরকারের কাছে দাবি আমাদের রাস্তাটা যেনো সংস্কার করা হয়।’
অটোরিকশা চালক চান মিয়া বলেন, ‘আমরা এই রাস্তাটা নিয়া অনেক কষ্টের মধ্যে আছি। প্রায় সময়ই গাড়ি নিয়া রাস্তায় আইটকা থাকি। আটকা গাড়ি তুলতে রাত্রের বেলা মানুষকে ডাক দিলে রাগ করে। প্যাক, কাঁদার মধ্যে নামতে চায় না। আত্মীয় স্বজন আসলে অনেক বেইজ্জতি হতে হয়। আমাদের রাস্তাটা কইরা দিলে খুশি অইতাম।’
জয়দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের এখানে পাশাপাশি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়াও এ এলাকার অনেক ছেলেমেয়ে এ পথ পাড়ি দিয়েই বিভিন্ন স্কুল কলেজে যাতায়াত করে থাকে। কর্দমাক্ত পানি মাড়িয়ে তাদের নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় তাদের বই, খাতা এমনকি পোশাক পরিচ্ছন্ন ভিজে যায়। এতে করে তাদের পড়াশোনায় বিঘœ ঘটছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে বিনিত অনুরোধ, দ্রæত এই রাস্তার জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচল যেন নিশ্চিত করা হয়।’