সউদ আব্দুল্লাহ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি:
মাত্র ১০ মিনিটের মাঝারি বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান পানি জমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরে। শনিবার (১৭ মে) ও রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টিতে কালাই-ক্ষেতলাল সড়কসহ বাসস্ট্যান্ড এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে শিক্ষার্থী, রোগী, পথচারীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন।
বিশেষ করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কালাই সরকারি মহিলা কলেজ, ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র এই সড়কের আশেপাশে অবস্থিত হওয়ায় দুর্ভোগ আরও প্রকট হয়। শিক্ষার্থীদের অনেককেই ভেজা জামাকাপড় ও জুতা পায়ে কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়।
কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুল বলেন,
“পরীক্ষার সময় এমন দুর্ভোগে শিক্ষার্থীদের মনোসংযোগে প্রভাব পড়ে, স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হয়। এটি কেবল অবকাঠামোগত ব্যর্থতা নয়, বরং শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরির ব্যর্থতা।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ভবন, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং ফুটপাত দখলের কারণে অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। রাস্তার দুই পাশে জমে থাকা পানির সঙ্গে মিশে থাকা আবর্জনার কারণে মানুষজন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। অনেক সময় গন্তব্যেই পৌঁছানো যায় না।
এ পরিস্থিতি শুধু প্রধান সড়কেই নয়, কালাই উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস চত্বরে গিয়েও দেখা গেছে একই চিত্র। অফিস বন্ধ থাকায় জনসমাগম কম থাকলেও জমে থাকা পানি এলাকাবাসীর ক্ষোভ বাড়িয়েছে।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যবসায়ী ছানাউল হক বলেন,
“ড্রেন নেই, রাস্তা দখল হয়ে গেছে, চারপাশে ময়লার স্তূপ—শহরের পরিবেশ দিনে দিনে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে।”
পৌর শহরের অনুপযোগী পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করে প্রভাষক সেলিম রেজা বলেন,
“মাত্র ১০ মিনিটের বৃষ্টিতে হাঁটু পানি—এটা আধুনিক কোনো শহরের চিত্র হতে পারে না। এ অব্যবস্থাপনা জনগণের করের অপব্যবহার।”
এ বিষয়ে কালাই পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন,
“এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। একদিনে সমাধান সম্ভব নয়। তবে বর্ষা মৌসুমের আগেই ড্রেন নির্মাণ ও পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ফুটপাত দখলমুক্ত করার উদ্যোগও নেওয়া হবে।”