বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের পর বাংলাদেশে আমি নতুন নতুন নির্যাতনের ধারণা পাচ্ছি। আমার জীবনে আজকের মতো দৃশ্য দেখিনি। একটি পরিবার মুহুর্তে কিভাবে ধ্বংস হয়ে যায় তার উদাহরন আজ চরফ্যাশনের সাবেক ছাত্রদল নেতা আমান পরিবারের। চরফ্যাশন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও শিক্ষক নেতা হুমায়ুন কবির রাজন কিভাবে ওই এলাকার শত শত পরিবারকে নিঃস্ব করে ফেলেছে তা শুনলে সাধারণ মানুষ চমকে যাবে। আমি অবিলম্বে রাজনের চাকুরীচ্যুতসহ তার গ্রেফতারের জোর দাবি জানাচ্ছি। তার অবৈধ পথে হাজার হাজার কোটি টাকা কোন উৎস থেকে আয় করেছে তা দুদক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। চরফ্যাশনের সাবেক উপ-মন্ত্রী জ্যাকব ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মেজবাহ’র ছত্রছায়ায় রাম রাজত্ব করেছে। এভাবে আর কত পরিবারকে সে নিঃস্ব করেছে তা খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, তাকে যারা প্রশ্রয় দেবে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলবো।
৫ মে সোমবার, সকাল ১১.৩০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খা হলে ভোলা চরফ্যাশনের আতংক জ্যাকব ও মেজবার অন্যতম দোসর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হুমায়ুন কবির রাজন কর্তৃক মানবাধিকার কর্মী মোঃ আমান ও তার পরিবার একের পর এক দুষ্ট চক্রান্ত ও প্রতিহিংসার শিকার। প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা। জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উপদেষ্টা সেলিম আহমেদ, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদারসহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় মানবাধিকার সমিতি ভোলা জেলার সদস্য ও ভিকটিম পরিবারের সদস্য মো. আমান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চরফ্যাশনের সাবকে মন্ত্রী জ্যাকব ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মেসবাহ এর অন্যতম দোসর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের চরফ্যাশন এর সভাপতি হুমায়ুন কবির রাজন ২০২৩ থেকে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ায় আমার স্ত্রীর সঙ্গে। এ বিষয়ে আমি জেনে গেলে নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাদের সংসারে অশান্তি হতে থাকে। এই অশান্তির জের ধরে আমার স্ত্রী আমার সংসার থেকে চলে যায় এবং ২০২৪ এর শুরুর দিকে আমার কাছে ডিভোর্স লেটার পাঠায়। দুটি ছেলের দিকে তাকিয়ে আমি আমার সংসারটা বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করি এবং আমার আত্মীয়-স্বজন সকলের কাছে গিয়ে এ বিষয়ে জানাই। তখন এই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হুমায়ুন কবির রাজন সকলের কাছে সবকিছু অস্বীকার করে এবং আমাকে মিথ্যাবাদী ও প্রতারক বলে দাবি করে। তখন আবার আত্মীয়-স্বজন আমার কাছে প্রমাণ চাইলে আমি কোন প্রমাণ দিতে পারি না, তাই আমি হন্য হয়ে এদিক-সেদিক ঘুরতে থাকি একটা প্রমাণ পাওয়ার আশায় এবং আল্লাহ পাক আমাকে সেই সুযোগটা করে দেয়।
৫ আগস্টের পরে আমি আমার স্ত্রীর চাচাতো বোনের সূত্র ধরে জানতে পারি তারা বোরহানউদ্দিনের উত্তর বাসস্ট্যান্ড সরোয়ার কমপ্লেক্সের দোতালায় বাসা ভাড়া নিয়েছে। তখন ওই সময় আমি চট্টগ্রাম ছিলাম খবর পেয়ে আমি ভোলা বোরহানউদ্দিন যাই, আমি ওখানে বর্তমান ছাত্রদলের সভাপতি শাকিল এর মাধ্যমে ওদেরকে ওই বাসায় এক সাথে আটক করি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় একসাথে ধরার পরেও আমি কিছুই করতে পারি না কারণ উনি কাজি মনজুর ভাই এর সহযোগিতায় এবং টাকার পাওয়ারে ওখান থেকে খুব সহজে বের হয়ে আসে। পরবর্তীতে নাসিম কাজির মাধ্যমে ব্যাপারটা ফয়সালা হয়। স্থানীয় শালিসদার নাসিমকে যে আমাকে আশ্বাস দেয় আমার স্ত্রীর সাথে কথা বলে তিন মাসের মধ্যে একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবে।কিন্তু সেখান থেকেও আমি কোন ফয়সালা পাই নাই।পরবর্তীতে ও বিভিন্ন জায়গায় এবং ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়াতে থাকে রাজনের মাধ্যমে ওর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে এই কথার ভিত্তিতে সে আমার বিরুদ্ধে একটা জাল স্ট্যাম্প তৈরি করে এবং আমাকে নানা ভাবে নানা মানুষ দ্বারা বিভিন্ন জায়গায় আমার জীবনের হুমকি দিতে থাকে।
এপ্রিলের ১৮ তারিখে আমার বাড়িতে পুলিশ যায় এবং আমাকে জানায় আমার বিরুদ্ধে একটা ধর্ষণের মামলা হয়েছে মামলার ব্যাপারে জানতে আমি ঢাকায় আসি এবং এ ব্যাপারে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির জনাব আবুল কালাম আজাদ এর সাথে কথা বলি এবং তিনি বুঝতে পারে এটি একটি মিথ্যা বানোয়াট ভুয়া মামলা তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে তুমি চট্টগ্রাম চলে যাও এবং হাজিরা তারিখে তুমি ঢাকায় উপস্থিত থাকবে আমি চট্টগ্রাম রওয়ানা করলে দৈনিক বাংলার মোড়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী হুমায়ুন কবির রাজনের ভাড়া করা সন্ত্রাসী আমাকে ঘিরে ফেলে হুমকি দিতে থাকে তারা আমাকে বলতে থাকে রাজনের বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা কথা বলা বন্ধ করবি না হলে নিজের জীবন দিবি।এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি মতিঝিল থানায়একটি জিডি করি এবং জিডি করার তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করে আমার বাবা, চাচা এবং আমার বোনদের কাছে হুমকি দিতে থাকে। বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে সকল কথা বলা বন্ধ না করলে সে আমাকে এমন এমন মামলায় দিবে যে আমার বাবার সমস্ত জায়গা জমিন বিক্রি করে আমাকে জীবনেও জেলখানা থেকে বের করতে পারবে না।
চরফ্যাশন এর আওয়ামী লীগের হুমায়ুন কবির রাজন সে একটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সে তার প্রথম স্ত্রী কেও অপহরণ করে বিয়ে করে। বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা অবৈধভাবে ব্যাবহার করে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছে। ঢাকা, ভোলা, চরফ্যাশন সহ বিভিন্ন জায়গায় তার জমি,বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। চরফ্যাশন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও আবুবকরপুর দুলারহাট থানার স্বেচ্ছাসেবক দল এর নেতা মাসুদ হত্যার মদদদাতা হিসাবে সরাসরি জড়িত। তার এতো টাকা ও ক্ষমতার উৎস কোথায়? এখনো দূর থেকে কলকাঠি নেড়ে আমাকে ও আমার পরিবার কে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রধান উপদেষ্টা সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিম পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আমান এর পিতা আবুল কাশেম মিঝি, মাতা খাদেদা বেগম, আমান এর বড় ছেলে মোঃ জাহিদ, ছোট ছেলে আযান, ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম, আমান এর বড় বোন মুক্তা বেগম, মেঝ বোন সুরমা বেগম।
Message sender
মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার
সদস্য, মিডিয়া উপ-কমিটি ও ভাইস চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি