সিলেট সংবাদদাতা:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে আবু সাঈদ (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। রবিবার (২৩ জুন) গভীর রাতে উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা একরার হোসেন এবং স্থানীয় বিএনপি সভাপতি আতিকুর রহমানের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব থেকে উত্তেজনার সূত্রপাত। শুক্রবার উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও অস্ত্র প্রদর্শনের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়।
রোববার বিকালে, শান্তিগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ৫৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি দল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কুলঞ্জের হাতিয়া গ্রামে অভিযান চালালে সন্ত্রাসীরা ইঞ্জিনচালিত ট্রলারযোগে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় জগন্নাথপুরের গাদালিয়া গ্রামে। রাতে সেনাবাহিনী সেখানে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পাল্টা গুলি চালায় সেনাবাহিনী।
পরদিন সকালে, গ্রামবাসীরা আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত সাঈদ কেন সেখানে ছিলেন বা কার গুলিতে মারা গেছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য না মিললেও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন—তিনি সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত জিনিসপত্র:
- ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র (১ নলা বন্দুক, ৪টি পাইপ গান)
- বন্দুকের গুলি ও খোসা
- ৭টি রামদা, ৯টি বল্লম
- ৬টি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট
- ২টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার
গ্রেফতার করা হয়েছে চারজন সন্ত্রাসীকে। তাদের নাম–পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
সেনাবাহিনীর অভিযানের নেতৃত্ব দেন ১৭ পদাতিক ডিভিশনের (গ্রেড-১) অপারেশনাল অফিসার লে. কর্নেল পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঞা জানিয়েছেন, নিহতের লাশ সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে—একটি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায়, অপরটি আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায়।