ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠিতে শতাধিক বাবুই পাখির ছানা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী মোবারক আলীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার সন্ধ্যায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ এলাকা থেকে আটক করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি ডিবি) মো. সেলিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং ঝালকাঠি জেলা পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজেও এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মামলার বিষয়টি ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুর রহমান রবিবার বিকেলে নিশ্চিত করেন। মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন এলাকায় অবস্থিত একটি তালগাছ পাষণ্ড ব্যক্তিরা কেটে ফেলে, যেখানে বাবুই পাখির শতাধিক ছানা ও ডিম ছিল।
তালগাছটি বাবুই পাখির প্রজনন ও নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে দীর্ঘদিন পরিচিত ছিল। গত ২৭ জুন শুক্রবার তালগাছটি কাটা হয়। পাখির বাসায় থাকা ছানা ও ডিম পানিতে পড়ে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিছু বয়স্ক পাখি উড়ে গেলেও প্রায় শতাধিক ছানা মারা যায় এবং ডিম ভেঙে যায়।
বাবুই পাখির এই বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনায় স্থানীয়রা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাবুই পাখির বাসস্থান তালগাছটি মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ক্রয় করে কাটার ফলে এই ঘটনাটি ঘটে। মামলায় মোবারক আলী, মিজানুর রহমান এবং ফারুক হোসেনকে আসামী করা হয়েছে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে (POR নং ০১/ঝাল ২০২৪-২৫)।
ঝালকাঠি জেলা পুলিশের পরিকল্পনায় মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে মোবারক আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, তালগাছটি শুধু একটি গাছ ছিল না, এটি ছিল বাবুই পাখির প্রাণবৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। স্থানীয় জাহিদ হোসেন বলেন, “গাছটি কর্তনের মাধ্যমে প্রকৃতির সঙ্গে মারাত্মক অবিচার করা হয়েছে। যারা এই কাজ করেছে, তারা প্রকৃতির শত্রু।”