Kamalganj (Moulvibazar) Representative:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা বাগানে ৬ সপ্তাহ ধরে মজুরি বন্ধ। কাজ ও মজুরী বন্ধ থাকায় চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের মানবেতর জীবন যাপনের কারনে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের বিশেষ বরাদ্দকৃত জিআর এর ৩০ মেট্রিক টন চাল বন্টন করার উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন কার্যালয়। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১১টায় উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের মিরতিংগা চা বাগানে উপস্থিত থেকে ১ হাজার ৫শত চা শ্রমিকদের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বুলবুল আহমেদ।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর এর সভাপতিত্বে ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্লাবন পালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মিরতিংগা চা বাগানের ডিজিএম সৌকত আলম হেলালি, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইদ নাজমুল ইসলাম, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহব্বায়ক এম, এ, ওয়াহিদ রুলু, কমলগঞ্জ পৌর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক সরোয়ার শোকরানা নান্না, বিএনপি নেতা বিপ্লব, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর মনু-দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরী প্রমুখ।
মিরতিংগা চা বাগানের ডিজিএম সৌকত আলম হেলালি জানান, মিরতিংগা চা বাগানের শ্রমিকদের ৬ সপ্তাহ ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। তবে রেশন চলমান আছে। এছাড়াও গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ফ্যাক্টরী বন্ধ রয়েছে। ফ্যাক্টরী বন্ধ থাকায় চা পাতা চয়ন করার পর অন্য বাগানে তা বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিক, বাবু, ম্যানেজারসহ আমরা খুবই কষ্টে আছি। আমাদের স্টাফদের বেতন ৭ মাস, ম্যানেজারসহ আমাদের বেতন ১৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। খুবই কষ্টে দিনকাল চলছে আমাদের।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্লাবন পাল জানান, মিরতিংগা চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের বরাদ্দকৃত ৩০ মেট্রিক টন জিআর চাল ১ হাজার ৫ শত চা শ্রমিকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও পরবর্তীতে চা শ্রমিকদের জন্য কোনো সহযোগিতা আসে আমরা তাদের সহযোগিতা করে যাবো।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘বেতন বন্ধ থাকায় চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের মানবেতর জীবন যাপনের কারনে জেলা প্রশাসক এর উদ্যোগে বিশেষ বরাদ্ধ জিআর ৩০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ ও বন্টন করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য- ভরা মৌসুমে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ফাঁড়িসহ ১৬ টি চা বাগান মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ভরা মৌসুমে কোটি কোটি টাকা লোকসান মুখে পড়ছে চা কোম্পানি। এখন কোম্পানির জন্য মরার উপর খরার ঘাঁ এর মত হয়ে দাড়িয়েছে। সরকার যদি দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে চা শিল্প ধ্বংসের দিকে ধাবিত হতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বাগানের কর্তৃপক্ষের অনেকেই জানিয়েছেন।
Shabbir Elahi, Kamalganj