(জয়পুরহাট) প্রতিনিধি :
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে নিখোঁজ হওয়া নয়দিন পর প্রতিবেশির বাড়ির পাশে পরিত্যাক্ত খাল থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খেলার কথা বলে কাফি খন্দকার বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। কালীতলা-আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদ রোডে সহলাপাড়া মোড়ে মোশারফ হোসেনের দোকানের সামনে সন্ধ্যার আগমুহূর্তে ওই শিশুটিকে খেলতে দেখা গেলেও এরপর থেকে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে জানাগেছে, ২৬ এপ্রিল (শনিবার) বেলা ১২টায় উপজেলার সহলাপাড়া গ্রামের মশিউর রহমানের স্ত্রী হাবিবা বেগম বাড়ির পাশে খুলিয়ানে গরুর খড় খুলতে গিয়ে পূর্বদিক থেকে দূর্গ্ধ পায়। এরপর তিনি পাড়ার ভিতরে দৌড়ে গিয়ে ডাক চিৎকার দিতে থাকে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ওই খুলিয়ানে পাশে পরিত্যাক্ত খাল পারে গত কয়েকদিন আগে নিখোঁজ হওয়া কাফি খন্দকার (৮) এর অর্ধগলিত লাশ পরে থাকতে দেখে। মূহুর্তের মধ্যে খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পরে। শতশত নারী পুরুষ শিশুটির লাশ এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসে। শিশুটির মা উম্মে কুলছুম ও বাবা ইকবাল হোসেন থেমে থেমে মুর্ছা যাচ্ছে; আবার জ্ঞান ফিরে বলছে আমাদের সব সম্পদের বিনিময়ে আমার বুকের ধন ফিরিয়ে দিতে বলেছিলাম কিন্তু ওই ঘাতেকেরা কোন কথা শোনলনা। তাদের আর্তনাদে এলাকার আকাশ বাতাস ভাড়ি হয়ে উঠেছে।
খবর পেয়ে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় এবং শিশুটির বাবার স্বীকারোক্তি মোতাবেক সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
শিশু নিখোঁজের পর থেকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার পর গতকাল (২৫ এপ্রিল) শুক্রবার জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরদিন ওই শিশুটির অর্ধগলিত মরদেহ গ্রামের পরিত্যক্ত খাল পাড়ে পাওয়া যায়।
এঘটনায় শিশুটির বাবা ইকবাল খন্দকার বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে একই গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে সবুর (৪৫), আলম হোসেন (৪০) এবং মশিউর রহমান কলম (৩৫) আমার ছেলেকে গুম করে হত্যা করে পরিত্যক্ত খালে ফেলে দিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাসেল খন্দকার বলেন, আমার ধারণা শিশুটিকে গুম করার পর হত্যা করে কচুরিপানাযুক্ত ডোবায় ফেলে ফেলে দিয়েছে। এর সাথে জড়িত সকল অপরাধীকে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত ওসি) দীপেন্দ্রনাথ সিং বলেন, এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।