মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি:
যশোরের শার্শা উপজেলার সবচেয়ে বড় আমবাজার বাগআঁচড়া বেলতলা থেকে কেমিক্যাল মিশ্রিত আম বাজারজাতকরণ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৭ মে বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত শুরু হলেও, এর অন্তত তিন দিন আগেই বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে কৃত্রিম উপায়ে পাকিয়ে বাজারে তোলা হচ্ছে।
সরাসরি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অনেক আম ব্যবসায়ী রাসায়নিক দ্রব্য যেমন ‘ট্যাগপন’ স্প্রে করে অপরিপক্ব আম পাকাচ্ছেন। দুপুরে স্প্রে করলে পরদিন সকালেই আমের গায়ে রং ধরে, যা দেখে সহজেই পরিপক্ক মনে হয়।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগেই বাগান কিনে নেন। এরপর তারা আম মোটা করা, পোকামাকড় দমন, চকচকে করা এবং দাগমুক্ত রাখার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক ও এমনকি শ্যাম্পু পর্যন্ত স্প্রে করেন।
যদিও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ বছর ৫ মে আম ভাঙার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, তবুও ৩ মে থেকেই অনেকেই নিয়ম ভেঙে আম সংগ্রহ শুরু করেছেন। এরপর সেগুলোতে কেমিক্যাল প্রয়োগ করে বাড়িতে রেখে দুই দিন পর আড়তে এনে বাজারজাত করছেন।
চাষিরা বলছেন, এখনো গোবিন্দভোগ আম পরিপক্ক হয়নি, এর আঁটি শক্ত হওয়ার জন্য অন্তত ১০-১২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। কিন্তু লোভী ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় প্রশাসন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ‘ম্যানেজ’ করে কেমিক্যাল মিশ্রিত অপরিপক্ক আম বাজারে তুলছেন।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, ৪ মে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ৬ মে থেকে আম বাজারজাত শুরু হবে। কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা O শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম একই ধরনের সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, কেমিক্যাল ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেলে কিংবা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিশেষ সতর্কবার্তা: বাজারে উঠতে শুরু করা গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাইসহ বেশ কিছু জাতের আগাম আমে কেমিক্যাল ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে। ভোক্তাদের এসব আম কিনতে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।