সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের লালপুর গুচ্ছগ্রামের গজারিয়া নদীর খেয়াঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং যাত্রী হয়রানির অভিযোগে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, খেয়াঘাটের ইজারা বাতিল করতে হবে এবং স্থানীয়দের ওপর অযথা জুলুম বন্ধ করতে হবে।
গুচ্ছ গ্রামটি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নে অবস্থিত, যেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪৭টি পরিবার বসবাস করছে। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জন্য গজারিয়া নদী পারাপারের একমাত্র পথ হচ্ছে খেয়াঘাট। তবে খেয়াঘাটের ইজারায় দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা মিয়া ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি দাবি করেছেন যে, গৌরারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত মিয়া এবং ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মমিন মিয়া গজারিয়া খালটি এক লাখ দশ হাজার টাকায় অবৈধভাবে ইজারা দিয়েছেন এবং প্রতিদিন যাত্রীদের কাছ থেকে ২০ টাকা থেকে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে, যারা অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধ করতে পারেন না, তাদের সাথে মারধর ও গালিগালাজের মত ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মারুফা জানান, “আমরা গরীব, দিনমজুর। ভাড়া দিতে না পারলে ইজারাদারের লোকজন আমাদের মারধর করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।” অপর এক বাসিন্দা ছমির মিয়া জানান, “গলিগালাজ না শুনলে ভাড়া কম নিতাম। কিন্তু বাধ্য হয়ে দিতে হয়, কারণ অন্যথায় সমস্যা হয়।”
এ ব্যাপারে ইজারাদার দারু মিয়া ও সোহেল মিয়া দাবি করেছেন, তারা শুষ্ক মৌসুমে ১০ টাকা এবং বর্ষা মৌসুমে ২০ টাকা ভাড়া নেন, এবং রাতে কিছু যাত্রীরা ২০-৫০ টাকা দেন। তবে তারা জানান, কখনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়নি এবং স্থানীয়দের সাথে খারাপ আচরণ করেননি।
গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী জানিয়েছেন, “ইজারা প্রদান ছিল ইউনিয়নের আয় বৃদ্ধির জন্য। তবে স্থানীয়দের আপত্তি ও অভিযোগের কারণে বর্তমানে খেয়াঘাটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পূণঃ দরপত্রের মাধ্যমে নতুন ইজারা প্রদান করা হবে।”
এদিকে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা জানান, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।