সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি (রাঙামাটি):
রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ৩ নম্বর ফারুয়া ইউনিয়নের উলুছড়ি গ্রামে নির্মিত হচ্ছে ধ্যান ভান্তে (অজিতা মহাথের)–এর স্মৃতি মূর্তি। তাঁর প্রথম আগমনস্থল উলুছড়ি স্বদ্ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের পাশেই এই চৈত্য ও মূর্তি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিহারের অধ্যক্ষ ও ধ্যান ভান্তের শিষ্য ভিক্ষু জ্ঞান বংশ জানান, “এটি শুধু একটি মূর্তি নয়, ধ্যান ভান্তের আধ্যাত্মিক জীবনের একটি চিরন্তন স্মারক। উলুছড়ি ও ফারুয়া বাসীর সম্মতিতে মূর্তি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন এই কাজ শেষ করতে। শুধুমাত্র মিস্ত্রির খরচ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দানশীলদের সহায়তা কামনা করছি।”
সহযোগিতা করতে আগ্রহীরা বিকাশ (০১৮১৮২৭৮৪৯৮) ও নগদ (০১৮৬৯৪৭৮৯৮৪) নম্বরে যোগাযোগ করে পূণ্যলাভে অংশ নিতে পারেন বলেও জানান তিনি।
বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও হেডম্যান উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, “চৈত্যের উচ্চতা হবে প্রায় ৩৫ ফুট, আর ধ্যান ভান্তের মূর্তিটি হবে ১০ ফুট দীর্ঘ। ইতোমধ্যে নির্মাণকাজ দৃশ্যমান। সময়সাপেক্ষ হলেও আমরা একাগ্রচিত্তে কাজ করছি, যেন ভান্তের জীবিত অবস্থাতেই মানুষ তাঁকে স্মরণ করতে পারে।”
এ বিষয়ে স্থানীয় কার্বারী নিজয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “ভান্তের জীবদ্দশাতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি একজন আধ্যাত্মিক সাধক, তাঁকে স্মরণ করেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপকৃত হবে।”
তবে এখনো পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বিলাইছড়ি উপজেলা শাখাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে ভিক্ষু সংঘের সভাপতি আর্য্যলঙ্কার মহাথের বলেন, “আমাদের সঙ্গে এখনো আলোচনা হয়নি। জানালে আমরা আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো। তবে ধর্মীয় কাজে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসা উচিত।”
উল্লেখ্য, ধ্যান ভান্তে একজন ধূতাঙ্গ সাধক ও আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন দিব্যপুরুষ হিসেবে পরিচিত। তাঁর জন্ম ১৯৩৫ সালে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারের বিভিন্ন গুহায় ধ্যান করে আসছেন। উলুছড়ি বিহারে তিনি প্রায় ২৪ বছর আগে আগমন করেন। তাঁর উপস্থিতিতে হাজার হাজার ভক্তগণের সমাগম ঘটে, আর মানুষ বিশ্বাস করে তাঁর আশীর্বাদে মনের বাসনা পূর্ণ হয়।
স্মৃতি মূর্তি নির্মাণের এই মহতী উদ্যোগে ধর্মপ্রাণ জনসাধারণ ও দানশীলদের সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে।