Monir Hossain, Benapole Correspondent:
বাংলাদেশের ‘ফুলের রাজধানী’খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালীতে বেনাপোল-যশোর মহাসড়কের পাশে প্রতিদিন ভোরে বসে ফুলের বিশাল বাজার। এতে মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায় প্রশাসন এবার কঠোর অবস্থানে। সোমবার (১২ মে) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ভুপালী সরকারের স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মহাসড়কের পাশে ফুল বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, যা মঙ্গলবার (১৩ মে) থেকে কার্যকর হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জননিরাপত্তার স্বার্থে গদখালী বাজারসংলগ্ন মহাসড়কের দুই পাশে ১০-১২ মিটার সীমানার মধ্যে যেকোনো ধরনের বিপণন কার্যক্রম নিষিদ্ধ। কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়, মৃতপ্রায় রেইনট্রিগাছগুলোর নিচে জনসমাগম দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে এবং এই মহাসড়কটি দেশের অন্যতম ব্যস্ততম বেনাপোল-খুলনা-ঢাকা সড়কের অংশ হওয়ায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রায় চার বছর আগে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গদখালীতে এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে সাড়ে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পানিসারায় হিমাগারসহ আধুনিক বিপণনকেন্দ্র নির্মাণ করলেও নানা কারণে কেন্দ্রগুলো চালু করা যায়নি।
যশোর জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা জানান, “দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় এবার গদখালী বিপণনকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে। নতুনভাবে আরসিসি ঢালাই সড়ক নির্মাণ করায় যোগাযোগ সহজ হবে। তাছাড়া, গদখালী বাজারে যেখানে ইজারা মূল্য ৬ লাখ টাকা, সেখানে বিপণনকেন্দ্রে টোল খরচ মাত্র ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা—যা কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য লাভজনক।”
ফুল উৎপাদক ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “সরকারি উদ্যোগে বিপণনকেন্দ্র চালু হওয়ায় বহু কৃষক উপকৃত হবেন। তবে পানিসারার কেন্দ্রটি রাজনৈতিক বাধার কারণে এখনও বন্ধ রয়েছে। এর দ্রুত রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন।”
বলা যায়, মহাসড়ক ঘেঁষে চলা ফুলবাজারকে সরিয়ে আধুনিক বিপণন ব্যবস্থায় রূপান্তরের এই পদক্ষেপ ঝুঁকিমুক্ত ও পরিকল্পিত বাজার ব্যবস্থার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সফল বাস্তবায়ন হলে উপকৃত হবেন হাজারো ফুলচাষি, বাড়বে বাণিজ্যের পরিধিও।