নওগাঁ প্রতিনিধি , মো. হাবিবুর রহমান:
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক রুহুল আমিন।
জানা গেছে, উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোপাল চক হঠাতপাড়া গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা নারী নাজমা বেগম (২৮) হঠাৎ রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হলে বিকেলে তাকে নিয়ামতপুর ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান, গর্ভের সন্তান মৃত এবং প্রসূতির জীবন রক্ষায় তাৎক্ষণিক সিজার করতে হবে। পরিবারের সদস্যরা ভয়ে সম্মতি দেন।
ডা. রুহুল আমিন বিকেল ৫টার দিকে সিজার করেন এবং পরে নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে একটি কাটুনে মুড়িয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। ক্লিনিক মালিক শরিফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাত ৮টার দিকে নবজাতককে মৃত বলে পরিবারের হাতে তুলে দেন।
তবে পরিবার যখন দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন নবজাতক নড়াচড়া শুরু করে। বিষয়টি বুঝে তারা তড়িঘড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শিশুটি জীবিত এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে নবজাতককে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনায় নবজাতকের পরিবার চিকিৎসকের গাফিলতি এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের বিচার দাবি করেছেন।
নাজমা বেগম বলেন, “তাড়াহুড়ো করে অপারেশন করে আমাদের বলা হলো বাচ্চা মারা গেছে। দাফনের সময় বুঝতে পারি বাচ্চা বেঁচে আছে। আমরা গরিব মানুষ, এর বিচার চাই।”
ডা. রুহুল আমিন বলেন, “নবজাতকে মৃত ভেবে কিছুক্ষণ অবজারভেশনে রেখে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলি। কোনো প্রাণচিহ্ন না থাকায় ভুল হয়েছে।”
নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল নাহিদ বলেন, “এই ধরনের অপারেশন ক্লিনিকে করা অনুচিত। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান জানান, নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।