মীর ইমরান, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুর শহরে হেলমেট ও মাস্ক পরে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার সরদার কলোনি সড়ক থেকে মিছিলটি বের হয়ে ডাক্তার তোতা সড়কে গিয়ে শেষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ২৫-৩০ জনের একটি দল মুখে মাস্ক ও মাথায় হেলমেট পরে মিছিল করে। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই মিছিলটি শেষ হয়। মিছিলকারীদের কারও মুখ চেনা যায়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আবুল হাওলাদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও আলোচিত ছাত্রনেতা শামীম আকন। মিছিলটিতে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সাবেক এমপি শাজাহান খানের ছবি সংবলিত ব্যানার ব্যবহার করা হয়। ব্যানারে লেখা ছিল: “আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও অবৈধ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল।”
মিছিলে দেওয়া স্লোগানগুলো ছিল—
- “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু”
- “শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই”
- “শেখ হাসিনা বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে”
- “অবৈধ সরকার মানি না, মানব না”
রাত ১২টার পর মিছিলের ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, নির্জন রাস্তায় ব্যানার হাতে নিয়ে মিছিল করছে কয়েকজন তরুণ।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এমন কোনো মিছিলের তথ্য আমাদের কাছে নেই। হয়তো শহরের গলিপথে লুকিয়ে তারা মিছিল করেছে। এ ধরনের মিছিল বেআইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, শামীম আকন এখনও এলাকায় অবস্থান করছে এবং ভয়ভীতি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে। নিহত এক ছাত্রের পরিবারের দাবি, “যদি শামীম আকনকে এখনই আটক করা না হয়, তাহলে ছেলের হত্যার বিচার পাওয়া সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি জাহিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ হাওলাদারসহ শীর্ষ নেতারা পলাতক রয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দেসহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।