Limon Mia, Sarishabari (Jamalpur) Representative
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সীমান্তবর্তী জোড়খালী ইউনিয়নের হাটমাগুরা এলাকায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে তিন ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে কৃষি জমি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় কৃষক ও ভুক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে হাটমাগুরা গ্রামে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নার্গিস আক্তার বলেন, “আমি অল্প জমির ওপর নির্ভর করে সংসার চালাই। কিন্তু অবৈধ ড্রেজারের কারণে আমার জমি ভেঙে গেছে। এখন আমি কীভাবে খাব, কিভাবে চলবো?”
ভুক্তভোগী সুখিতন জানান, “তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করে। আমরা নারীরা বাধা দিতে গেলে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে, কিন্তু পরে আবার শুরু করে। আর পুরুষরা বাধা দিতে গেলে তাদের হুমকি-ধমকি এমনকি মারধরও করা হয়।”
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে খোরশেদ, মকবুল হোসেন, তোজাম আকন্দ ও জুলহাস উদ্দিন জানান, “এই অবৈধ ড্রেজার মাটি উত্তোলনের ফলে আমাদের ফসলি জমি ধ্বংস হচ্ছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, জাতীয় শ্রমিক লীগ ৫ নম্বর জোড়খালী ইউনিয়নের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান এই অবৈধ বালু উত্তোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির কিছু নেতাকর্মী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোগল ফকির, মোয়া ফকির ও হবি সরকারসহ ভুক্তভোগীরা সেনা ক্যাম্প অধিনায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের উদ্যোগে কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে আবার তা শুরু হয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। জমি ও মাটি ক্রয় করে সেখান থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মহাসড়ক নির্মাণের সহায়তা করছি আমরা।”
এ বিষয়ে মুঠোফোনে মাদারগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছায়েদা খানম লিজা জানান, “ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকবার বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। এরপরেও যদি তারা মাটি উত্তোলন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।