মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা:
সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় চলছে অবাধে মাটি কাটার মহোৎসব। ফলে একদিকে যেমন লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি উর্বর কৃষিজমি হারাচ্ছে তার উৎপাদনক্ষমতা।
অপ্রাপ্তবয়স্কদের দিয়ে অবৈধ ট্রাক্টর চালানোয় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি। তিন ফসলি জমি, উঁচু ভিটা, এমনকি জলাশয়ও রেহাই পাচ্ছে না মাটি খেকোদের হাত থেকে। অনেক এলাকায় কৃষি জমি পরিণত হচ্ছে ডোবা-পুকুরে, হুমকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি ও ফসলি ভূমি।
উপজেলার অন্তত চারটি ইউনিয়ন — পান্তাপাড়া, নাটিমা, যাদবপুর ও বাঁশবাড়িয়ার বিভিন্ন গ্রামে (গাড়াপোতা, বাগানমাঠ ইত্যাদি) দেখা গেছে, মিন্টু, আনোয়ার ও সুমন নামে প্রভাবশালী কয়েকজনের নেতৃত্বে চলছে অবাধে মাটি কাটা।
স্থানীয়দের অভিযোগ:
বাগানমাঠ গ্রামের মন্টু মিয়া বলেন, “মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের কারণে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।”
পান্তাপাড়ার আলমগীর হোসেন বলেন, “অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের দিয়ে ট্রাক্টর চালানো হচ্ছে। কোনো ট্রেনিং ছাড়াই তারা এসব চালাচ্ছে — দুর্ঘটনা লেগেই আছে। স্কুলগামী বাচ্চারা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে।”
মাটি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য:
বাগানমাঠ গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী মুকুল মিয়া দাবি করেন, “আমরা ভূমি কর্মকর্তা শফি উদ্দিনের অনুমতি নিয়েই কাজ শুরু করেছি।”
আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত পান্তাপাড়ার সুমন বলেন, “আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেই মাটি কাটছি, কাউকে ভয় পাই না।”
প্রশাসনের বক্তব্য:
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শফি উদ্দিন বলেন, “এই এলাকায় মাটি উত্তোলন হচ্ছে কি না, তা আমার জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা খাতুন বলেন, “যদি কোথাও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়, তা জানালে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রতিবেদন:
জিয়াউর রহমান জিয়া