Shamsul Haque Jewel, Gazipur Correspondent:
গাজীপুরের কালীগঞ্জে গরু চুরির সন্দেহে চারজনকে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলেই নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার বালুচর এলাকার মৃত জাকির হোসেনের ছেলে শান্ত (২০) এর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় অপর তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোররাতে উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের শামসুদ্দিন মোল্লার গোয়ালঘরে হানা দেয় চোরচক্র। শামসুদ্দিন মোল্লা (৫০) পাশের ঘর থেকে শব্দ পেয়ে চোরদের দেখে ফেলেন। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ও স্থানীয়দের সহায়তায় চোরদের ধাওয়া করে চারজনকে ধরে ফেলে গ্রামবাসী। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের পিটুনি দিলে শান্ত নামে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হন মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হরা (বড্ডা) এলাকার মৃত হাফিজুল্লাহর ছেলে রিফাত (১৯), বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে রুবেল (২৮) এবং তুমুলিয়া ইউনিয়নের বান্দাখোলা এলাকার আনিল চন্দ্রের ছেলে হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা আবদুল্লাহ (২৭)। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক আহত তিনজনকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। আর নিহত শান্ত’র লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শামসুদ্দিন মোল্লা বলেন, কয়েকদিন আগে আমার একটি গরু চুরি হয়েছে। এরপর থেকে আমি নিজেই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। ভোরে চোরেরা আমার ঘোয়ালঘরে ঢুকে পড়লে চিৎকার করে সবাইকে ডাক দিই। পরে চারজনকে ধরে গ্রামবাসী। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের পিটুনি দেয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ চারজনকে হাসপাতালে আনেন। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। বাকি তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “গরু চুরির অভিযোগে চারজনকে ধরে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। এতে একজন মারা গেছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”