নূর আলম, নেত্রকোণা প্রতিনিধি:
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার হাওড় ও জলাশয়ে নিষিদ্ধ “চায়না দুয়ারী” জালের ব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এতে প্রাকৃতিক মৎস্যসম্পদ, দেশীয় মাছের প্রজনন চক্র ও জলজ জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চায়না দুয়ারী জাল হলো অতি সূক্ষ্ম ফাঁসবিশিষ্ট একটি ফাঁদ, যা কারেন্ট জালের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। এই জালে মাছের ডিম-পোনা থেকে শুরু করে ব্যাঙ, শামুক, সাপ, কচ্ছপসহ প্রায় সব ধরনের জলজ প্রাণী আটকে যায়। এতে ভেঙে পড়ছে জলজ প্রাণীদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও প্রজনন চক্র।
স্থানীয়রা জানান, মাছুয়াইল বিল, কালিয়ান বিল ও জালিয়া হাওড়সহ একাধিক জলাশয়ে দিন-দুপুরে অবাধে এই জালের ব্যবহার চলছে। কিন্তু প্রশাসনের তেমন নজরদারি নেই, যার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে কিছু চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে ধ্বংস করেছি। শিগগিরই নিয়মিত ও কঠোর অভিযান চালিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বিজয়া পাল বলেন, “এই জাল পরিবেশগত ও অর্থনৈতিকভাবে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। এতে মাছের ডিম ও পোনাও ধরা পড়ে, ফলে প্রজনন প্রক্রিয়া ধ্বংস হয়।”
সচেতন মহলের মতে, টেকসই জলজ পরিবেশ রক্ষায় এখনই নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এর মধ্যে রয়েছে—
- নিষিদ্ধ জালের আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রয় সম্পূর্ণ বন্ধ
- ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা
- জেলেদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা
- ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি
তাদের মতে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে আগামী প্রজন্ম দেশীয় মাছ ও প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য থেকে বঞ্চিত হবে।