রিপন মারমা, রাঙামাটি:
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫ নম্বর ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ১০০ নম্বর মৌজার হেডম্যান অরুন তালুকদারের সহধর্মিণী লাকি তনচংগ্যা বিষমুক্ত মিশ্র ফসল ও খামার চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন।
২০০৩ সাল থেকে ১২ একর জমিতে আম, কলা, কাঁঠাল, পেঁপে, ভুট্টা, শসা, লেবু, বড়ইসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও শাকসবজির মিশ্র চাষ করে আসছেন তিনি। তার এই মডেল দেখে উৎসাহিত হয়ে এলাকার তরুণ-তরুণীরা শুরু করেছেন একই ধরণের বিষমুক্ত চাষাবাদ।
খামারে এখন ৬-৮ জন স্থানীয় কর্মচারী কাজ করছেন, যাদের প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। এতে যেমন এলাকার বেকারত্ব কমছে, তেমনি কর্মীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এছাড়া কয়েকজন যুবক লাকির অনুপ্রেরণায় নিজেদের খামার গড়ে তুলেছেন।
লাকি তনচংগ্যা জানান,
“স্বামীর পৈত্রিক ১২ একর জমিতে শখের বসে চাষ শুরু করলেও এখন এটি একটি সফল খামারে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর ভালো লাভ হচ্ছে, পাশাপাশি আমার খামারে যারা কাজ করছেন, তারাও উপকৃত হচ্ছেন।”
১৯৭৭ সালে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে জন্ম নেওয়া লাকি ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাস করে অরুন তালুকদারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি শুধু ফসল নয়, পশুপালনেও সফল। তার খামারে শুরুতে ২০টি গরু থাকলেও বর্তমানে দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে খামারটি। এখন প্রতিদিন ১৫-২০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে।
খামারের তদারককারী রামপাহাড় দেবতাছড়ির জীবন তনচংগ্যা বলেন,
“আমি ও আমার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছি। খামারে কাজ করে সংসার চালাচ্ছি, মেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছি। এটি আমার জীবনের বড় সহায়।”
প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ জানান,
“লাকি তনচংগ্যাকে আমরা সবসময় পরামর্শ দিচ্ছি। কীটনাশক, সার প্রয়োগসহ সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছেন তিনি। তিনি একজন আদর্শ চাষি।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. এনামুল হক হাজারী বলেন,
“লাকি তনচংগ্যা শখের বসে শুরু করলেও এখন তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। আমরা তাকে খামার ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি।”