লালমোহাম্মদ কিবরিয়া
শেরপুরের নকলায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে হিন্দু পরিবারকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তিকে বের করে দিয়ে অন্য একটি পরিবারকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে হিন্দু পরিবারের অভিযোগ।
পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ২ এপ্রিল (বুধবার) সকালে উপজেলার ২নং নকলা ইউনিয়নের উত্তর নকলা এলাকার (ডাকাতিয়াকান্দা) আশ্রয়ন প্রকল্পে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু ও বৃদ্ধসহ ভুক্তভোগী পরিবারের ৪জন এলাকার এক বাড়ির আঙ্গীনায় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা কাপা কাপা কণ্ঠে বলেন, আমরা কাউকে কিছু বলতে পারিনা। কিছু বললে যদি পরিবারের আয়ের একমাত্র লোকের কিছু হয়ে যায়। তখন না খেয়ে থাকতে হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর নকলা এলাকার (ডাকাতিয়াকান্দা) এলাকার চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে শ্রী গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস ২০২২ সালে সরকারের উপহার দেওয়া একটি ঘর বরাদ্দ পেয়ে বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী ও এক সন্তানসহ পরিবারের ৪ সদস্য সেখানে বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ বুধবার সকালে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জোরপূর্বক শ্রী গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের পরিবরকে তার ঘর থেকে বের করে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসকারী একজন জানান, উপজেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মুরাদুজ্জামান মাসুমের নির্দেশে গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের পরিবারকে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা কনাবাদশা বের করে দিয়েছে। তাদেরকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনকে জানানো হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দ্বীপ জন মিত্রকে জানিয়েই সরকারের উপহারের ঘর থেকে বের করা হয়েছে।
২নং নকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উমর ফারুক বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। গৃহহীন ওই পরিবারকে আমি নিজে সরকারের উপহারের ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। অফিস খোলা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দ্বীপ জন মিত্র বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। তবে কিছু ভিডিও দেখেছি। তাতে খুব খারাপ লাগতেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে যাচাই বাছাই করে ঘরের প্রকৃত মালিককে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া ভিডিওতে শুনতে পেলাম আমার নাম ভাঙ্গানো হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানিনা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনকে তাদের ঘর প্রাপ্তির বিস্তারিত উল্লেখ পূর্বক একটি লিখিত অভিযোগ জমা করার আহবান জানিয়েছন।