রাজু রহমান,যশোর জেলা প্রতিনিধি:
আসন্ন ঈদুল ফিতর। রোজা যতই কমে আসছে ঈদ বাজারে ততই বাড়ছে সব বয়সের,সব পেশার মানুষের কেনাকাটার ধুম। শিশু,কিশোর- কিশোরী যুবক -যুবতী, বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ কেনাকাটার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বিভিন্ন মার্কেটের পোশাক, জুতা ও কসমেটিক্সের দোকান গুলোতে। শ্রেণি ভেদে কেউ কেউ আবার ফুটপাতের দোকান গুলোতেও ভিড় জমাচ্ছে। বছরের অন্য সময় কেনাকাটা তেমন একটা না করলেও ঈদে যেন নতুন পোশাকের বিকল্প নেই।গার্মেন্টস, টেইলার্স, জুতা ও কসমেটিক্রসের দোকান গুলোতে তাই এখন উপচে পড়া ভিড়।
ক্রেতারা কেউ দেখছে। কেউ দর কষাকষি করছে। কেউ কিনছে। এভাবে ব্যস্ত সময় পার করছে ক্রেতা ও দোকানিরা। ক্রেতাদের অভিযোগ পণ্যের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। দোকানিরা সেটা মানতে নারাজ তারা বলেন দাম সামান্য বেড়েছে কিন্তু ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে। ধনীরা যখন কেনাকাটায় ব্যস্ত, মধ্যবিত্তরা তখন দর কষাকষি করছে। নিন্মবিত্ত মানুষেরা বসে আছে দাম কমার অপেক্ষায়। তারা বলছে, চাঁদ রাতে দাম একটু কমতে পারে তখন কিনব।
শার্শা উপজেলার নাভারন, শার্শা, বেনাপোল, বাগআঁচড়া, গোগা, গোড়পাড়া, সাড়াতলা, উলাশীসহ বিভিন্ন বাজারের মার্কেট ঘুরে দেখাগেছে,বিভিন্ন বয়সের মানুষ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে ঈদ উদযাপন করতে যা যা প্রয়োজন সেসব দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন।
পোশাকের মধ্যে শার্ট, প্যান্ট, লুঙ্গি, গেঞ্জি, টুপি, পাঞ্জাবি, পাজামা, শাড়ি, থ্রি পিস, টু পিস, লেহেঙ্গা, বোরকাসহ নানান বাহারী পোষাক যার যেটা পছন্দ, সে সেটা ক্রয় করছে। জুতার দোকানগুলোতে দেশে-বিদেশি জুতার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, বিক্রি বেশ ভালো। কসমেটিক্স ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের বেচা বিক্রি মূলত ঈদের তিন চার দিন আগে থেকে শুরু হয়। এখন ক্রেতা আসছে তবে তুলনামূলক কম। ২৫ রোজা থেকে বেঁচা বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
মধ্যবিত্ত কয়েকজন ক্রেতা বলেন ঈদের বাজার খুব চড়া। দোকানিরা দাম হাকাচ্ছেন তিন, চার গুণ বেশি আমরা হিমশিম খাচ্ছি কেনাকাটায়। বুঝতে পারছি না কিভাবে পরিবারের সবাইকে নতুন পোশাক দেব। নিম্নবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতারা আক্ষেপের সুরে বলেন,চাল, ডাল, তেল, তরকারি কিনতে গিয়ে আমাদের পকেটে অবশিষ্ট কিছু থাকে না, তারপর এত চড়া দামে পরিবারের মানুষের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ক্ষমতায় যতটুকু কুলায় ততটুকুই কিনব।

তাসলিমা রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, “খুব বেশি দাম চাচ্ছেন দোকানিরা। আমার ৬ বছরের মেয়ের একটি ফ্রক ৩২০০ টাকা দাম চইলো দর কষাকষি করে সেটা ২০০০ টাকায় কিনেছি।একটি বোরকা ২৫০০ টাকা দাম বলে পরে সেটা ১৪০০ টাকায় বিক্রি করলো।” ক্রেতার অভিযোগ বেশি দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে নাভারন, বেনাপোল ও বাগআঁচড়ার কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন,, সব জিনিসের দাম এখন একটু বেশি, আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে সামান্য লাভ রেখে আমরা ক্রেতার হাতে পণ্য তুলে দিচ্ছি। সব শ্রেণীর ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পোশাক আছে। যার যেটা প্রয়োজন সে সেটা কিনবে। আমাদের বেচা বিক্রি মোটামুটি সন্তোষজনক তবে ঈদ মুখে বিক্রি আরো কয়েকগুণ বাড়বে তেমনটা আশা করছেন এসব ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন জুতা ব্যবসায়ী বলেন দেশি-বিদেশি সব ধরনের জুতা বিক্রি হচ্ছে দামটা খুব বেশি না বাড়ায় সকল শ্রেণীর মানুষ কেনাকাটা করতে পারছে। শিশু-কিশোর ও যুবকদের শার্ট প্যান্ট এর পাশাপাশি পছন্দের তালিকায় আছে চশমা ও ঘড়ি এসব দোকানগুলোতেও কেনাকাটার ছোঁয়া লেগেছে। তবে সাথারণ ক্রেতাদের চাওয়া ব্যবসায়ীরা সল্পলাভে বিক্রয় করলে সকল পেশার সব শ্রেণির মানুষ পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করতে পারবে।