Sunamganj Correspondent
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের লঞ্চঘাট-পূর্বইব্রাহীমপুর আসা-যাওয়ার খেয়াঘাটের পূর্বদিকে সুরমা
নদীরপাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে যাত্রী ছাউনি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক বরাবরে ৩ শত ৬ জনের স্বাক্ষরিত আবেদনে স্থানীয় বাসিন্দার
নাম, ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। তারা র্যালি সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে এই
আবেদন দেন।
এসময় জেলা প্রশাসক আশ্বস্থ করে বলেছেন, ্#৩৯;যদি সরকারী জায়গা হয়, তবে যাত্রী ছাউনি
নির্মাণের জায়গার ব্যবস্থা হবে। এই বিষয়টি দেখার জন্য এডিসি রাজস্বকে দিচ্ছি।্#৩৯; পরে
এডিসি (রাজস্ব) সাথে দেখা করেন গ্রামবাসীরা। তিনিও আশ্বস্থ করেছেন একইভাবে। এ সময়
জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান উপস্থিত অর্ধশতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।আবেদনে
শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল এবং
ব্যবসায়ীদের স্বাক্ষর ও মোবাইল নম্বর রয়েছে।
আবেদনে তারা খেয়াঘাটে অপেক্ষমান হাজারো শিক্ষার্থী ও যাত্রীদের রোদ-বৃষ্টিতে নিরাপদ
চলাফেরা নিশ্চিত করতে নদীর তীরে অবৈধ হোটেলসহ অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদ করে যাত্রী ছাউনি
নির্মাণের দাবি জানান।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, লঞ্চঘাট এলাকায় বেঙ্গল ওয়াটার নামের লঞ্চ সার্ভিস অফিসের কার্যক্রম
চলতো ছোট্ট একটি পাকা ঘরে। ১৯৫৯-১৯৬১ সালের দিকে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক
(এসডিও) বি. আর নিজাম জনস্বার্থে এই অফিস ঘর নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেন। তখন
অনুমান ৩ শতাংশ জায়গার উপর এই অফিস ঘর নির্মাণ করা হয়। এই জায়গার শ্রেণী লায়েক
পতিত। যাহার জেএল নং-১৪৪, মৌজা-তেঘরিয়া। সরকারী ১ খতিয়ানের অন্তর্ভক্ত এস.এ দাগ নং-
১৬০১, জায়গার পরিমাণ ৩১ শতাংশ।
স্থানীয়রা জানান, তৎকালীন পাকিস্তান আমলে পাক ওয়াটার ওয়েজ কোং লিমিটেড বিলুপ্ত হলে
বাংলাদেশ আমলে বেঙ্গল ওয়াটার ওয়েজ লিমিটেড নামকরণ হয়। সেই পাকিস্তান আমল থেকে
অফিসের সামনের দিকে ছিল জেলা বন বিভাগের চলাচল রাস্তা। এখনও বন বিভাগের এই অফিস
বিদ্যমান আছে। যাহার জেএল নং-১৪৪, মৌজা-তেঘরিয়া। সরকারী ১ খতিয়ানের অন্তর্ভক্ত এস.এ
দাগ নং-১৬০২, জায়গার পরিমাণ ৪৬ শতাংশ, শ্রেণী-বাড়ি। বন বিভাগে আসা-যাওয়া করতে
১৬০১ দাগের নদীরপাড় দিয়ে রাস্তা নির্মাণ ছিল। এখন অফিসের কর্মচারী কর্মকর্তাদের চলাচলের
রাস্তাটি বন্ধ আছে।
বর্তমানে সরকারী ১নং খতিয়ানের অন্তভূর্ক্ত ১৬০১ দাগের ৩১ শতক জায়গায় বিলুপ্ত বেঙ্গল
ওয়াটারের অফিস, বন বিভাগের রাস্তা, নদীর তীরসহ অন্যান্য জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ
করে মাসে লক্ষ টাকা আয় করে আসছেন বেঙ্গল ওয়াটার অফিস দখল করে থাকা অবৈধ বসতিরা।
স্থানীয় একাধিক প্রবীণ ব্যক্তি জানান, দীর্ঘ ৭০ বছর যাবত শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় এই
খেয়াঘাটের নৌকায় পারাপার হয়ে আসছেন। সদর উপজেলার সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের স্কুল, কলেজ,
মাদ্রাসার হাজারো শিক্ষার্থীসহ বয়স্ক মহিলা পুরুষ, রোগী, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ
প্রতিদিন খেয়া নৌকায় পারাপার হয়ে শহরে আসা-যাওয়া করছেন। কিন্তু সুনামগঞ্জ পৌর শহরের
এই লঞ্চঘাট এলাকায় শহর ও পূর্ব ইব্রাহীমপুর গ্রামে যোগাযোগ খেয়াঘাট সংলগ্ন
পূর্বদিকে প্রায় ১৭ বছর আগে থেকে সুরমা নদীরপাড় দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
এতে নারী, মেয়ে শিক্ষার্থীরা খেয়া পারাপারের অপেক্ষায় দাঁড়ানোর জায়গার সংকট দেখা
দিয়েছে। এমনকি নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা (হোটেল) থাকায় ইভটিজিং সহ হোটেলের ময়লা-
আবর্জনা ফেলা, সিঁড়ির উপর দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের গায়ে রান্না করা চুলার গরম তেল
ছিটকে পড়া, ছাইয়ের গুড়া উড়িয়ে ফেলা, নোংরা পানি ফেলা প্রভৃতি সমস্যার কারণে
প্রতিনিয়ত ঝামেলা সৃষ্টি হয়ে আসছে। এছাড়াও হোটেলের রান্নার চুলা ও লাকড়ি রোডের
উপর স্তুপ করে রাখায় পুলিশ ফাঁড়ির গাড়ি ও যাত্রী সাধারণের চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি
বেড়েছে। হোটেলের নোংরা পানি সিঁড়ির পাশে ফেলায় চারিদিকে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
এসব সমস্যা নিরসনে অবৈধ স্থাপনা দ্রæত উচ্ছেদ করে যাত্রী ছাউনি নির্মাণের দাবি জানান
স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পূর্বইব্রাহীমপুর
গ্রামের বাসিন্দা ও সিনিয়র সাংবাদিক আকরাম উদ্দিন, সুরমা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য
মো. গিয়াস উদ্দিন, পূর্ব ইব্রাহীমপুর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সাধারণ
সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সমাজসেবক জগলুল আহমদ, নুরুল ইসলাম, রাজা মিয়া,
রাসেল আহমদ, কমর উদ্দিন, দেলোয়ার মিয়া, কমলা মিয়া, বাবু মিয়া, দুলাল মিয়া, বকুল মিয়া, জহুর
উদ্দিন, আব্দুল হান্নান, কুটি মিয়া, নাজিম উদ্দিন, আব্দুল মন্নান, মিয়াধন, কালা মিয়া,
ইসলাম উদ্দিনসহ অনেকে। ##
Kulendu Shekhar Das
Sunamganj Correspondent
০৮.০৪.২০২৫