গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের বৈষ্ণবদাস গ্রামে এক তরুণীর অনশন ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। প্রেমিকের বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে স্বামীকে তালাক দেওয়া ওই তরুণী এখন সেই প্রেমিকের বাড়িতেই বিয়ের দাবিতে গত চার দিন ধরে অনশন করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মোরশেদ মিয়ার সঙ্গে প্রায় পাঁচ বছর আগে লেখাপড়ার সুবাদে সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেয়েটির। চার বছর আগে মেয়েটির পারিবারিক বিয়ে হলেও সেই প্রেমের সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ ছিল। সাত মাস আগে মোরশেদ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে মেয়েটি স্বামীকে তালাক দেন।
১৩ এপ্রিল সকালে বিয়ের আশ্বাসে মোরশেদ তাকে বাড়িতে ডেকে আনেন। কিন্তু পরিস্থিতির ঘোরপ্যাঁচে প্রেমিক মোরশেদ আত্মগোপনে চলে যান। মেয়েটি জানিয়েছেন, “মোরশেদের কথায় বিশ্বাস করে আমি আমার স্বামীকে তালাক দিয়েছি। এখন সে পালিয়ে গেছে। বিয়ে না করা পর্যন্ত আমি এই বাড়ি ছাড়ব না। নইলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই।”
মেয়েটির এই অনশনকে কেন্দ্র করে এলাকায় শত শত মানুষের ভিড় জমেছে। অনেকেই প্রেমিক মোরশেদের দায়িত্ব নিয়ে তার সাথে বিয়ের দাবি জানাচ্ছেন।
এদিকে, মেয়েটির মা অভিযোগ করেছেন, বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তারা ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও চেয়ারম্যান বিয়ে পড়াননি।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ছেলের প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় বিয়ে পড়ানো সম্ভব হয়নি। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি।”
প্রেমিক মোরশেদের মা বলেন, “আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এ বিষয়ে গ্রামবাসীর বিচার চাই।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি এই ঘটনাকে পুঁজি করে উভয় পক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসী।
সামাজিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ঘটনার দ্রুত ও ন্যায়সংগত সমাধান দাবি করছেন এলাকাবাসী। প্রেম, প্রতিশ্রুতি ও প্রতারণার এমন জটিল ঘটনায় গ্রামীণ সমাজে এক গভীর আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।