মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় আওয়ামীলীগ সমর্থন কারী ব্যবসায়ীর বাড়ীতে হামলা , ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে ।
আওয়ামী লীগ সমর্থীত ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে, হামলাকারীরা বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর করে রান্নাঘর, খড়ির ঘর ও একটি ছোট ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
রাজশাহীর পুঠিয়ায় পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থীত এক কাঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম আবদুল হান্নান। তিনি উপজেলার হাতিনাদা গ্রামের বাসিন্দা। আবদুল হান্নান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম তাঁর বাড়িতে এই হামলা চালিয়েছেন।
আবদুল হান্নান জানান, ঘটনার সূচনা হয় নন্দনপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে। সেখানে তাঁর ছোট ছেলে তুষার আহমেদ মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে বসে ছিলেন। এ সময় রফিকুল ইসলামের সঙ্গে চোখাচোখি হওয়াকে কেন্দ্র করে রফিকুল তাঁর ছেলেকে মারধর করেন। বিষয়টি হান্নান গুরুত্ব না দিলেও কিছুক্ষণ পর রফিকুল ইসলাম দলবল নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান।
তিনি বলেন, “তখন আমি বড় ছেলেকে নিয়ে পাশের একটি চাতালে লুকিয়ে পড়ি। হামলাকারীরা বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর করে রান্নাঘর, খড়ির ঘর ও একটি ছোট ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে দুটি ছাগল ও একটি গরুও পুড়ে যায়। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।’’
আবদুল হান্নানের দাবি, গত ৫ আগস্টের পর থেকে রফিকুল ইসলাম তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশ ও বাড়িঘর ধ্বংসের হুমকিও দেন তিনি। মূলতঃ এর জের ধরে এ হামলা হয়েছে।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “হান্নান আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও তিনি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নন। শুধু ভোট দেন। কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না যে তিনি দলীয় কার্যক্রমে জড়িত।”
আবদুল হান্নানের , বাড়ির একাংশ পুড়ে গেছে। শোবার ঘরগুলোতে ভাঙচুর করা হলেও সেখানে আগুন লাগেনি।
স্থানীয় যুবক ইকবাল হোসেন বলেন, “তুষার ও তাঁর মামাতো ভাই দোকানে হাসাহাসি করছিল। রফিকুল ইসলাম মনে করেন তাঁকে উদ্দেশ করে হাসাহাসি করা হয়েছে। এরপর তিনি তুষারকে মারেন। তুষার বাড়িতে গেলে তার বাবা উত্তেজিত হয়ে চিল্লাচিল্লি করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই হামলা হয়।”
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকে তালা দেওয়া রয়েছে, বাড়িতে কেউ নেই। দেয়ালে কুড়ালের কোপ ও টিনের চালায় ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, রফিকুল এসব চিহ্ন দেখিয়ে নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন বলে প্রচার করছেন।
পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন বলেন, “আবদুল হান্নান থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।”