হুমায়ন কবির মিরাজ: যশোরের শার্শা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যেন পরিণত হয়েছে ‘নকল দলিল বানানোর কারখানায়’। এই অফিসের নকল নবীশ আব্দুল্লাহ-আল মামুনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নকল দলিল সরবরাহের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, মামুন রেজিস্টার বহিতে এন্ট্রি না করে অবিকল জাল নকল দলিল তৈরি করে প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০টি করে দলিল সরবরাহ করে আসছিলেন। প্রতি দলিল বাবদ তিনি গ্রহীতাদের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা আদায় করতেন। অথচ এই নকল দলিল সরবরাহের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি রয়েছে, যা নির্দিষ্টভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু মামুন দীর্ঘদিন ধরে সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারের লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মোহরার শরিফ রানা দায়িত্ব পাওয়ার পর মামুনকে নকল সরবরাহের দায়িত্ব দেন নকল নবীশ লিয়াকত। এরপর থেকেই মামুনের দাপট বাড়তে থাকে। পূর্বেও একই অপরাধে একাধিকবার ধরা পড়লেও লিয়াকতের সহযোগিতায় রক্ষা পান তিনি।
অফিসের এক গোপন সূত্র জানায়, মামুন ও লিয়াকত এ অবৈধ উপার্জনের অংশীদার। দলিল লেখক সমিতির কিছু নেতা ও অফিসের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়টি চাপা দিতে নানা প্রভাব ও প্রলোভনের আশ্রয় নিচ্ছেন। এমনকি হাতজোড় করে তদবির করতেও দেখা গেছে বলে জানা যায়।
গত ৬ এপ্রিল অবশেষে মামুনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন দলিল লেখক সমিতির নেতারা। তারা বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। এরপর থেকেই মোহরার শরিফ রানা পুনরায় নিজেই নকল দলিল সরবরাহের দায়িত্বে ফিরেছেন।
তবে এত বড় জালিয়াতি ও রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
শার্শা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার এ বিষয়ে বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”