কালাই উপজেলা প্রতিনিধি,সউদ আব্দুল্লাহ :
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের বড়পুকুর বলিগ্রাম পশ্চিমপাড়ায় পুকুর থেকে উদ্ধারকৃত এক বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তে জানা গেছে, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং ছিলো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মোঃ শাহীন মন্ডল (৩৮)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।শনিবার (১৫ মার্চ) বিকালে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মোঃ রজ্জব আলী (৬০) ছিলেন একজন ভ্যানচালক ও নাইটগার্ড। প্রতিদিনের মতো ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ রাতে তিনি রাতের খাবার শেষে পুকুর পাহারা দিতে যান। পরদিন(২২ ডিসেম্বর) সকালে তাঁর লাশ পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখা যায়। প্রথমে পরিবার ও স্থানীয়রা ধারণা করেন, এটি পানিতে পড়ে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু। সেই সন্দেহে কালাই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নং-১৩, তারিখ-২২/১২/২৪) দায়ের করা হয়।
পুলিশের তদন্তে সন্দেহ তৈরি হলে ভিকটিমের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায়, রজ্জব আলীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বরং এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এরপর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত পরিচালনার একপর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, হত্যার পেছনে নিহতের বড় ছেলে মোঃ শাহীন মন্ডলের (৩৮) হাত রয়েছে।
পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, পিতার প্রতি দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই শাহীন মন্ডল পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে লাশ পুকুরে ফেলে দেন তিনি।পুলিশ শাহীন মন্ডলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরবর্তীতে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। দ্রুতই তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।