Staff Reporter:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি এখনো নির্ধারিত হয়নি এবং এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। রোববার (১৮ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সিইসি বলেন, “নির্বাচনের সময় নিয়ে যেটা এসেছে—ফেব্রুয়ারিতে হোক, এপ্রিলে হোক—আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগে বলা হচ্ছিল ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে, এখন নতুন দিক আসছে। লন্ডনে কী আলোচনা হয়েছে, তার বাইরে আমি কিছু জানি না।”
সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠকের পর বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজানের আগেও নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় সিইসি বলেন, “আমার কাছে পরিষ্কার নয়। আরপিওর (নির্বাচনী আইন) ১১ ধারায় বলা আছে, নির্বাচন কমিশন গেজেটের মাধ্যমে তারিখ ঘোষণা করবে। ছয় মাস আগেই তারিখ ঘোষণা করার বিধান নেই।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তারা কী ভাবছে, সেটা না জেনে সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকার প্রধান নিজেই বলেছেন, একটি ভালো নির্বাচন দেবেন—এর মানে তারও দায়িত্ব আছে।”
নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমরা প্রস্তুত আছি। ডিসেম্বর থেকে জুন সময় ধরে কাজ করছি। তবে এখন সময় সীমিত হয়ে আসছে। জুন আর ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনেক পার্থক্য।”
তরুণ ভোটারদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে সিইসি জানান, “আমরা চাচ্ছি যেন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক তরুণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়। সে লক্ষ্যে ভোটার তালিকা এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণে কাজ চলছে। আইন পরিবর্তনের চিন্তাও আছে, যাতে তফসিল ঘোষণার সময় যারা ভোটার হওয়ায় উপযুক্ত হবে, তারা যেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।”
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “আমরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করব। কোনো দলের স্বার্থে নয়। যারা ব্যালট বাক্স ছিনতাই, কেন্দ্র দখল করে জিততে চায়, তারা দিবাস্বপ্ন দেখছে। এবার সে সুযোগ দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা রেফারির ভূমিকায় থাকব। যারা খেলবে, তারা খেলুক। কিন্তু মাঠ সবার জন্য সমান থাকবে—এটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। জনগণ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করে, আর সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি।”
সিইসি জানান, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কোনো পক্ষের প্রভাব ছাড়া, আইনের আলোকে নির্বাচন পরিচালনা করা হবে।