রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে পৌঁছেছে। দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১২০ জন, যাদের বেশিরভাগের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। তিনি জানান, দুর্ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ও ৬টি অ্যাম্বুলেন্স উদ্ধার কার্যক্রমে কাজ করছে, এবং অভিযান এখনও চলছে।
দগ্ধদের অবস্থা গুরুতর
উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আকাশ বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত ১২০ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী পেয়েছি। বেশিরভাগেরই শরীরের ৬০-৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, এবং অধিকাংশই কিশোর-কিশোরী।”
বার্ন ইনস্টিটিউটে হটলাইন চালু করা হয়েছে এবং সেখানে আহতদের জন্য জরুরি চিকিৎসা প্রদান চলছে।
বিধ্বস্তের ক্ষণ ও উদ্ধার তৎপরতা
আইএসপিআর জানায়, বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে এবং মাত্র ১২ মিনিট পর, ১টা ১৮ মিনিটে উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আগুন ধরে যায়। বিমানে ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, বিমানটি সরাসরি জুনিয়র সেকশনের একটি ভবনের ওপর পড়ে, যেখানে নার্সারি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছিল।
বিমান বিধ্বস্তের পরপরই ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট দুপুর ১টা ২২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরবর্তীতে মোট ৯টি ইউনিট উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবির ২ প্লাটুন সদস্যও যুক্ত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। এদিন সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
জাতীয় নেতাদের শোক ও উদ্বেগ
ঘটনার পর গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।