২০০৯ সালের পিলখানায় সংঘটিত ঐতিহাসিক বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আরও ২৭ জন সাবেক বিডিআর সদস্য। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টার দিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের বিভিন্ন ইউনিট থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
কারা সূত্রে জানা গেছে, জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১২ জন, পার্ট-১ থেকে ৫ জন এবং পার্ট-২ থেকে ১০ জন রয়েছেন।
এর আগে সোমবার আদালত ৪০ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। সেই আদেশের কাগজপত্র মঙ্গলবার বিকেলে কারাগারে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার সকালে ২৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জামিনে মুক্তির খবরে কারাগারের ফটকে সকাল থেকেই ভিড় করেন মুক্তিপ্রাপ্তদের স্বজনরা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রিয়জনকে কাছে পেয়ে কেউ আবেগে কেঁদে ফেলেন, কেউ জড়িয়ে ধরেন নিঃশব্দে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ আল মামুন বলেন, “মঙ্গলবার বিকেলে জামিনের আদেশপত্র হাতে পাওয়ার পর দ্রুত আইনানুগ যাচাই করে বৃহস্পতিবার সকালে ২৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
এ নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিনপ্রাপ্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২১৮ জনে। এর আগে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১৭৮ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে এক নারকীয় বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ সেই ঘটনায় নিহত হন বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা। নিহতের মোট সংখ্যা ছিল ৭৪।
বিদ্রোহের পরদিন ও ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে পুলিশ—একটি হত্যা এবং অন্যটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা বিচারিক কার্যক্রম শেষে পর্যায়ক্রমে অনেক আসামি খালাস ও জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। তবে এখনো কারাগারে রয়েছেন বহু আসামি, যাদের মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান।