Staff Reporter:
২০০৪ সালের ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল) চেয়ে আবেদনটি পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (২৮ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া, মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মো. শিশির মনির।
মামলার পটভূমি
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নারী বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন, আহত হন কয়েক শ নেতা-কর্মী। হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি মামলার অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অধিকতর তদন্ত করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে নতুন করে আসামি করে।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণা করে। এতে—
- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড
- তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন
- ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায় ও আপিল
২০১৮ সালের রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে গত ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ সব আসামিকে খালাস দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করে যা বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
আইনজীবীদের বক্তব্য
আইনজীবীরা জানান, অধিকতর তদন্তে আনা সম্পূরক চার্জশিটের ভিত্তিতে কারো সাজা দেওয়ার নজির এই উপমহাদেশের ৪০০ বছরের ফৌজদারি বিচার ইতিহাসে নেই। এ প্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দেন।
পরবর্তী শুনানি
এই আলোচিত মামলার পরবর্তী শুনানি হবে রোববার (২ জুন)। দেশবাসীর নজর এখন আপিল বিভাগের রায়ের দিকে।