যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিকার নিশ্চিত করতে একটি হটলাইন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (৯ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনা মোকাবিলায় প্রতিকার নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত একটি আলাদা হটলাইন চালু করা হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হটলাইন নম্বরটি জানিয়ে দেওয়া হবে এবং এটি টোল ফ্রি হবে।
তিনি আরও বলেন, এই হটলাইন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে, যার মাধ্যমে যে কেউ যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগ তদারকির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি ডেডিকেটেড সেল গঠন করা হবে।
আসিফ নজরুল জানান, ধর্ষণের মামলাগুলো তদারকির জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে একটি আলাদা সেল গঠন করা হবে। এই সেলের মাধ্যমে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা হবে এবং অযথা কালক্ষেপণ রোধ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দিনাজপুরের শিশু ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের জামিন আপিল বিভাগে বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “অনেক সময় প্রত্যাশামাফিক আমরা কাজ করতে পারি না। সেটা নিয়ে যন্ত্রণা থাকে, আত্মদহন থাকে।”
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এই সিদ্ধান্তকে সামাজিকভাবে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির বিরুদ্ধে এই হটলাইন চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই হটলাইনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা দ্রুত প্রতিকার পাবেন এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে।
যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির বিরুদ্ধে হটলাইন চালু করার সিদ্ধান্ত একটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এটি ভুক্তভোগীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সহজলভ্য মাধ্যম তৈরি করবে। আশা করা যায়, এই উদ্যোগের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনা কমে আসবে এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।