বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক গোলটেবিল বৈঠকে বলেছেন, দেশের এজেন্ট ব্যাংকিং খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে, এবং শীঘ্রই ৫০% ব্যাংকিং এজেন্ট নারী হবেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করবে। গভর্নরের মতে, এজেন্ট ব্যাংকিং খাতটি ইতিমধ্যেই একটি বিপ্লব সৃষ্টি করছে এবং এটি গতানুগতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ‘নীরবে বিপ্লব’ হিসেবে বর্ণনা করেন, যা বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘পাথ টু রিকভারি ফর ব্যাংকিং সেক্টর’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমার ধারণা, এটি গতানুগতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ছাড়িয়ে যাবে এবং এটি নীরবে বিপ্লব করছে।” গভর্নর আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতের আধুনিকীকরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এবং আর্থিক খাতকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চায়।
“এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব ঘটাচ্ছে বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করতে কাজ চলছে: গভর্নর”
গভর্নর আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে এবং এই পদক্ষেপে প্রধান উপদেষ্টা যথেষ্ট আগ্রহী। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করার কাজ জোরেশোরে চলছে। প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে তাদের সাহায্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী সেরা ব্যবস্থা বা নীতিমালা খুঁজে পেতে সহায়তা করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করতে কাজ করছে।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনর্গঠন কাজও চলমান রয়েছে। এই উদ্যোগগুলো বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কার্যকরী এবং আধুনিক করে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে, যা বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশে নারী ব্যাংকিং এজেন্টদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির উদ্যোগটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে উৎসাহিত করবে এবং ব্যাংকিং খাতে নারীদের অবদানকে আরও দৃশ্যমান করবে। পাশাপাশি, এটি দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে, বিশেষত গ্রামীণ ও দরিদ্র এলাকাগুলোর মধ্যে যেখানে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছানো কঠিন।
এই ধরনের উদ্যোগগুলি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে, যা কেবল বর্তমান ব্যবস্থা নয়, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।