প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নুরুল হুদাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। রোববার (২২ জুন) রাতের দিকে রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে উত্তরা-পশ্চিম থানার পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান।
এই ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলার আবেদন করেছে। আবেদনে সাবেক তিনজন সিইসি সহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ছিল ‘প্রহসনমূলক’ এবং এসব নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে।
সাবেক তিন সিইসি যারা এই মামলার আবেদনে নাম পেয়েছেন কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ (২০১৪ সালের নির্বাচন), এ কে এম নুরুল হুদা (২০১৮ সালের নির্বাচন), কাজী হাবিবুল আউয়াল (২০২৪ সালের নির্বাচন)
মামলার আবেদনে আরও নাম এসেছে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন সচিব, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইজিপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধানদের। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, এসব ব্যক্তি ও সংস্থা যৌথভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিহত করে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর নিপীড়ন চালায় এবং নির্বাচনী বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটায়।
এর আগে, আজ সকালে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীনের কাছে পৃথক একটি আবেদন জমা দেয়। সেখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ তুলে তৎকালীন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলার আবেদন পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে নুরুল হুদাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অভিযোগ এবার আইনি পরিণতির দিকে যাচ্ছে কিনা, সেটি নজরদারির বিষয়।