দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বুধবার রেল ভবনে অভিযান চালিয়ে ‘ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির নথি উদ্ধার করেছে। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন স্বপন কুমার রায়, মিনু আক্তার সুমি এবং আনিসুর রহমান রাসেল।
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার নামে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা রেলওয়ে খাতে বিশাল অঙ্কের প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে রেলের নির্মাণ কাজগুলো চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজম এর সহায়তায়, ম্যাক্স গ্রুপ রাতারাতি শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং রেলের বড় বড় প্রকল্প লাভ করে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির অধীনে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে, যার এক বড় অংশ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে। এর মধ্যে ‘টেন্ডার ডন’ খ্যাত ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার এর নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র সামনে এসেছে।
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার: এক বিরাট সিন্ডিকেট
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো রেলওয়ে খাতে একাধিক বড় প্রকল্প পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে লাকসাম-চিনকি আস্তানা রেল প্রকল্প, আখাউড়া লাকসাম রেলপথ প্রকল্প, এবং দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। ২০১১ সালে চিনকি আস্তানার প্রকল্প থেকে শুরু করে ২০১۶ সাল পর্যন্ত তারা একের পর এক বড় প্রকল্পে কাজ পেয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে, ম্যাক্স গ্রুপ এককভাবে রেলওয়ে প্রকল্পের বড় অংশ অর্জন করেছে, যার মাধ্যমে তারা ৬০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। এই গ্রুপটির নাম এখন রেল সিন্ডিকেটের ‘কালো বিড়াল’ হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন উঠছে: কীভাবে এত বড় প্রকল্প পেয়েছিল ম্যাক্স?
যদিও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার-এর পূর্ব অভিজ্ঞতা তেমন ছিল না, তবুও তারা ২০৯ কোটি টাকার চিনকি আস্তানা প্রকল্প থেকে শুরু করে একে একে অনেক বড় বড় রেল প্রকল্পে কাজ পায়। বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, কীভাবে তারা এত বড় প্রকল্প লাভ করলো এবং কীভাবে হাসিনা সরকার এর উন্নয়ন খাতে কার্যকর ভূমিকা রেখে এই ধরনের দুর্নীতির ঘটনা ঘটতে দিল?
এদিকে, দুদকের অভিযান এবং এই দুর্নীতির নথি উদ্ধার করা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে রেলের প্রকল্প এবং দুর্নীতির এই চিত্র সামনে আসায় প্রশ্ন উঠছে সরকার কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।